পাংসাউ ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে অরুণাচল প্রদেশের ঘন জঙ্গলে ঘেরা একটি গ্রামের নাম। আর এই পাংসাউ গ্রামেই রয়েছে এমন একটি রহস্যময় হ্রদ, এই হ্রদের কাছে গেলে কেউ ফিরে আসে না বলে ভুল করেও কখনো এর কাছা কাছি কেউ যেতে চায় না। আজ থাকছে লেক অব নো রিটার্ন নামে পরিচিত হওয়া এই রহস্যময় হ্রদটির পরিচিতি,
হয়ত ব্যাপারটি নিয়ে আপনার ভাবনায় আসতে পারে, কেন? কিসের জন্য? কি কারণে এমন হয়? হ্রদের কাছা কাছি গেলে কেউ কেন ফিরে আসে না? আসলে ব্যাপারটি এমন নয় যে, এই হ্রদের আশেপাশে গেলে কোনো জলদানব এসে আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে। কিংবা এই হ্রদে বাস করা কোন প্রানী আপনাকে খেয়ে ফেলবে, তবে আপনি যতই এই হ্রদটির কাছের দিকে এগিয়ে যাবেন হৃৎপিণ্ডের গতি ততটাই কমে আসবে এবং ধীরে ধীরে এক সময় আপনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বেন। আর এ কারণেই হ্রদটিকে বলা হয় ‘লেক অব নো রিটার্ন’ বা না ফেরার হ্রদ !
প্রায় এক শতাব্দী ধরে ১.২ বর্গকিলোমিটার দৈর্ঘের হ্রদটি এই রহস্য নিয়ে টিকে আছে। স্বাভাবিক ভাবেই হ্রদটির এই মৃত্যুর রহস্যের জাল ক্রমে গ্রামের সীমানা ছাড়িয়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ধীরে ধীরে সারা বিশ্ববাসীর কাছে হ্রদটি অশুভ ও প্রাণঘাতী হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই রহস্যের শুরু হয়। সেসময় হ্রদের পাশে একটি মার্কিন যুদ্ধ বিমান জরুরী অবতরণের দৃশ্য নিকটবর্তী যুদ্ধের ময়দান থেকে অন্য সেনারা দেখেছিলো। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেই বিমান এবং পাইলট চোখের পলকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
বিমানটির পাইলটের অন্তর্ধানের ঘটনা চার দিকে বাতাসের বেগে ছড়িয়ে পড়ে। এর কিছু দিন পরে ঘটা আরেকটি ঘটনা এই রহস্যকে আরো ঘনীভূত করে তোলে। সেই সময় একদল যুদ্ধ ফেরত জাপানি সেনা পথ হারিয়ে এই হ্রদের তীরে উপস্থিত হয়। এবং যথারীতি সেই সেনা দলের সকলেই অদৃশ্য হয়ে যায়। পুর্বের মত এই গল্পও ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনা। এরপর থেকেই কেউ ভয়ে ওই হ্রদের ত্রিসীমানায় যেত না। যদিও সেসময় জায়গাটি ছিলো ঘন জঙ্গলে ঘেরা। এখন জঙ্গল অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে। শুধু আজো পরিষ্কার হয়নি এই মৃত্যু রহস্যের কারণ।
রহস্যময়তার ভিত্তিতে ভারতকে পৃথিবীর অন্যতম রহস্য ময় দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে এমনও ভারতের অনেক রহস্যময় জায়গা আছে যেগুলোর রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়নি। লেক অব নো রিটার্ন ভারতের তেমনই একটি রহস্যময় জায়গা।
Leave a Reply