প্যান্ডামিক এই সময়টিতে আমরা এমন এক পরিস্থিতির ভিতর দিয়ে যাচ্ছি যে খানে ভয় আমাদের মনে দিন দিন জেকে বসছে। তার কারন আমরা এমন এক শত্রুর সাথে যুদ্ধ করছি তাকে না আমরা দেখতে পারি না আমরা তার স্পর্সের অনুভব পাই। তাই রোজ বাসা থেকে বের হবার সময় ভয় ও আতংকে বের হতে হয়। ভয় পাওয়া মানুষের একটি স্বহজাত স্বভাব। কিন্তু এই ভয় যদি বেশি আকারে পাওয়া শুরু করে তখন তা আর স্বহজাত থাকে না। তখন এটি মেন্টাল ডিজ অর্ডার এর পর্যায়ে পড়ে যায়। যাকে প্যানিক ডিজঅর্ডার (panic disorder) বলে। এটি ভয়ের ব্যাধি এগোরফেবিয়া (agoraphobia) এর অন্তর্গত একটি বিশেষ মেন্টাল ডিজ-অর্ডার । সৃজন শীল ব্লগ কালাক্ষর এ আজকে আমরা ভয়ের ব্যাধি প্যানিক ডিজঅর্ডার (panic disorder) নিয়ে আলোচনা করবো।
প্যানিক ডিজঅর্ডার (panic disorder) একটি মানসিক সমস্যা ও ব্যাধি। এর বাংলা অর্থ উদ্বেগ। প্যানিক ডিজঅর্ডারের ফলে প্রচন্ড আতঙ্কের শিকার হয় এবং এই প্যানিক অ্যাটাকের স্থায়ীত্বকাল ৮ থেকে ১৫ মিনিটের মতো হয়। তবে অনেক সময় ক্ষেত্রে বিশেষ ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের বেশী সময় হতে পারে।
সাইকোলজি নিয়ে আমার লেখা পুরাতন পোস্ট গুলো পড়ে আসতে পারেন
Panic Disorder (প্যানিক ডিজঅর্ডার ) সাধারণত পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশী হয়। এই মানসিক সমস্যা যেকোনো বয়সেই দেখা দিতে পারে, তবে টিনএজে (১৩-১৯)বয়সে সর্বাধিক সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া প্যানিক ডিসঅর্ডারের লক্ষণগুলি বিশেষ করে ২৫ বছর বয়সের কম বয়সীদের মধ্যেও দেখা যায়।
প্যানিক ডিজঅর্ডার (panic disorder) কোন সতর্কতা ছাড়াই মানুষের মনে তীব্র ভয় সৃষ্টি করে যা হঠাৎ শুরু হয় । প্যানিক ডিজঅর্ডার (panic disorder) এর আক্রান্তের ধরন এবং এ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা আলাদা পরিবেশ ও মানুষ ভেদে আলাদা আলাদা হয় বলে এর লক্ষণগুলির ভিতরেও প্রায়শই ভিন্ন রুপ পরিলক্ষিত হয়।
ঠিক কেন? আর কি কারনে প্যানিক ডিজঅর্ডার হয় তার কারণগুলি এখনো স্পষ্টভাবে এখনো বের করা যায় নি। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে প্যানিক ডিসঅর্ডারটি জিনগতভাবে সংযুক্ত থাকতে পারে। তবে প্যানিক ডিসঅর্ডারটি জীবনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সাথেও জড়িত থাকে। যেমনঃ
বৈবাহিক কিংবা দাম্পত্য জীবনে জটিলতা। অর্থকষ্ট বা আর্থিক সমস্যা। হঠাৎ কোনো বিষাদময় ঘটনা ঘটা।অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ বা গর্ভপাত। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। যেকোন ফোবিয়া (অস্বাভাবিক ভীতি) থেকে প্যানিক ডিসঅর্ডারের ঘটতে পারে। জিনগতভাবে হতে পারে।
যাদের প্যানিক ডিসঅর্ডার হয় তারা সবসময় উৎকন্ঠায় থাকেন। অসুখ না হলেও অসুখ বাড়লো কিনা তা নিয়ে সবসময় নজরদারি চালিয়ে যায়।অনেকেই মিনিটে কতবার শ্বাস নিচ্ছে সেটা পরিমাপও করেন। এরকম খুঁতখুঁতে স্বভাব রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ না করে বরং রোগ আরো রাড়িয়ে দেয়।এই প্যানিক ডিসঅর্ডার দৈনন্দিন জীবন যাপনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
১।প্যানিক ডিসঅর্ডারের অভিজ্ঞতা কারো প্রথমবারের মতো হলে আক্রান্তের ভিতরে অনেকই বিশ্বাস করেন যে তাদের হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে।
২।প্যানিক ডিজঅর্ডার (panic disorder) মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা খুব জরুরী সাথে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এর বিশেষ ফল পাওয়া যায়।
৩। প্যানিক ডিসঅর্ডার নামক এই ভয়ের ব্যাধি একবার নির্মূল করা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে আপনি যদি অ্যালকোহল এবং উত্তেজক যেমন ক্যাফিনের পাশাপাশি অবৈধ ড্রাগগুলি এড়িয়ে চলতে পারেন তবে আপনার ভিতরে প্যানিক ডিজঅর্ডার (panic disorder) এর লক্ষণগুলি হ্রাস করতে পারেন।
৪। (Cognitive Behaviour Therapy) এর মাধ্যামে রোগীর মনের ভিতরে ভ্রান্ত ভয় ও আতঙ্ক এর ধারণা দূর করতে হবে এবং তাকে বুজতে হবে যে এ রোগের জন্য রোগীর মৃত্যু হয় না এবং এটি কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনা আপনি ই স্বাভাবিক হয়ে যায়।
৫। (Family Therapy) এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি। এতে রোগীর পরিবারের বাকী সদস্যদেরকে এই ডিসঅর্ডার সম্বন্ধে সাধারণ ধারণা দেওয়া হয়। ফলে তারা রোগীকে সহযোগিতা প্রদান করতে পারে।
Leave a Reply