1. sjranabd1@gmail.com : Rana : S Jewel
  2. solaimanjewel@hotmail.com : kalakkhor : kal akkhor
বাইপোলার ডিসঅর্ডার কি? আজ জানবো, কখনও হর্ষ কখনও বিষাদের রোগ বাইপোলার এর আদিপান্ত - কালাক্ষর
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন

বাইপোলার ডিসঅর্ডার কি? আজ জানবো, কখনও হর্ষ কখনও বিষাদের রোগ বাইপোলার এর আদিপান্ত

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১
বাইপোলার ডিসঅর্ডার কি? আজ জানবো, কখনও হর্ষ কখনও বিষাদ, রোগের নাম বাইপোলার এর আদিপান্ত
মডেল - তানজিন তিশা। ছবি - ফেসবুক

বাইপোলার ডিসঅর্ডা(Bipolar Disorder) হল মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের একটি বিশেষ অবস্থা।  বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মেজাজ খুব দ্রুততার সাথে পরিবর্তিত হয়, এই সময় মানুষ হুট করেই অস্বাভাবিক ভাবে খুব সুখী বা উচ্চ (ম্যানিক) বোধ করে আবার অবিশ্বাস্য ভাবে হুট করেই নিজেকে খুব অসুখী ও হতাশা গ্রস্থ বোধ করে থাকে। কোন কারণ ছাড়াই হুট হাট মানুষের মন ভাল আর খারাপ হয়ে যাবার রোগ কে তাই অনেকে মজার ছলে কখনও হর্ষ কখনও বিষাদের রোগ বলে থাকেন। 

ডিপ্রেশন হল মানুষের এক ধরনের মুড ডিজ অর্ডার। ডিপ্রেশন মানেই মন খারাপ। এসময় কিচ্ছু ভাল লাগে না, আর সেই ভালো না-লাগা টানা এক থেকে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে থাকে। এর ফলে মানুষের খিদে বা ঘুম আচমকা খুব বেড়ে যায়, অথবা আচমকা খুব কমে যায়। মানুষটির আগে যা ভাল লাগত, তা এখন আর তা ভাল লাগে না এই ডিপ্রেশনে ভোগার কারণে। এ সময় তার পুরনো দিনের কোন সুখ সৃতির কথা খুব বেশি করে মনে হয় যা থেকে তার মনে হতাশা আর দুঃখ অনুভবের সৃষ্টি হয়,তার চোখ জলে ভরে ওঠে, শুরু হয় কান্না কাটি । কোন কাজে ঠিক মত মন সংযোগ করতে পারে না বলে কোন কাজ ঠিক মত করতেও পারে না, তখন  নিজেকে অপদার্থ মনে করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। আর এই নিজেকে অপদার্থ মনে হওয়া থেকে ও তখন মন খারাপ হয়, আর তা বিরামহীন ভাবে চলতেই থাকে। আর যে হুতু ডিপ্রেশনে সুখ নেই সব সময় কেবল দুঃখ ঘিরে থাকে তাই একে এক মুখি অবসাদ বা ইউনিপোলার ডিপ্রেশন বলে। বাইপোলার মানে হল দ্বিমুখী অবসাদ সুতরাং যাদের ভিতর সুখ এবং দুঃখ পর্যায় ক্রমে চলতে থাকে তাকে বলে বাইপোলার ডিপ্রেশন বা বাইপোলার ডিসঅর্ডা। বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) আক্রান্ত ব্যক্তিদের মেজাজের পরিবর্তনগুলি এমনকি এমনভাবে মিশ্রিত হয়ে উঠতে পারে যে কোন ব্যক্তি একই সাথে একই সময়ে ম্যানিক এবং হতাশ বোধ করতে পারে।

সৃজন শীল বাংলা ব্লগ কালাক্ষর এ আমার লেখা পুরাতন লেখা গুলো পড়ার জন্য অনুরোধ রইল 

আমরা জানি কোন মানুষের ভিতর সুখ দুঃখ হতাশা তার পারিপার্শীক অবস্থার উপর নির্ভর করে তারতম্য হয়। কিন্তু  বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেলায় তেমন টা দেখা যায় না, কারণ তাদের ভাল লাগা মন্দ লাগা, তাদের সুখ দুঃখ, হতাশার অনুভূতি গুলোর তারতম্য হতে কোন কারণ ই লাগে না। কারণ তাদের জীবনে কী ঘটছে,তা বিবেচনা না করেই তাদের এই মেজাজের দোলগুলি ঘটে থাকে । তাদের এই মেজাজের পরিবর্তনগুলি কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। আর তাতে সেই মানুষের চিন্তাভাবনা,ধ্যান ধারণা, কার্যক্ষমতা এবং দৈনন্দিন কাজকর্মগুলিকে প্রভাবিত হয়ে যায়।

বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) এর দুটো পর্যায় থাকে যেগুলো চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে আসে। পর্যায় গুলোর একটি হল ডিপ্রেশন। আর অন্যটি হল ম্যানিজ স্টেজ। এই ম্যানিক স্টেজে সব একেবারে উল্টে যায়। কারণ ছাড়াই এ সময় মন অত্যধিক প্রফুল্ল থাকে। খাওয়া-দাওয়া খুব বেড়ে যায়। মাথার মধ্যে একের পর-এক প্লট ঘোরে। এটা করব, সেটা করব। যে মানুষটা এতদিন পড়ে-পড়ে ঘুমোত বা ঘুম না-আসার জন্য কষ্ট পেত, তার এই অবস্থায় ঘুমের কোনও প্রয়োজনই হয় না। সারাদিনে চার-পাঁচঘণ্টা ঘুমিয়েই দিব্যি চাঙ্গা থাকতে পারে। এই সময়ে সবচেয়ে বড় যে গণ্ডগোলটা ঘটে, তা হল একের-পর-এক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। যা অনেক ক্ষেত্রেই শরীর অবধি গড়ায়। যার জন্য পরবর্তীকালে অনেক মূল্য চোকাতে হয়।

এই সব কিছুর বাইরে আরও একটা ব্যাপার ঘটে এই ম্যানিজ স্টেজে। তা হল, নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে টাকাপয়সা খরচ করা, এমন কি দান ধ্যান করা। আর কিছুদিন পর যখন এই স্টেজ কেটে গিয়ে আবার ডিপ্রেশন ফিরে আসে, তখন সবকিছুর জন্য তার মনে শুরু হয় চূড়ান্ত অনুশোচনা। যে হুতু ম্যানিক স্টেজে খরচের কোন হিসেব ছিল না তাই সেই সময় রীতিমতো অর্থনৈতিক কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। মন মেজাজ এই জন্য তিরিক্ষি হয়ে থাকে। হুট হাট করে গড়ে ওঠা সম্পর্কগুলো তখন আর টিকিয়ে রাখতে ইচ্ছে করে না। এদিকে যাদের সঙ্গে সম্পর্ক তারাও ভাবে, আমাকে ফ্লার্ট করে চলে গেল। তাদের তরফ থেকেও একটা রিভেঞ্জ নেওয়ার ব্যাপার শুরু হয়। সবমিলিয়ে জীবনের লাল বাত্তি হয়ে ওঠে। আর এই সব কিছুর জন্য দায়ী হল এই হল বাইপোলার ডিসঅর্ডার। বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) কে বাইপোলার ডিপ্রেশনও বলা হয়।

বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder)  রোগের ক্ষেত্রে সায়কিয়াট্রিস্টরা রোগীদের কাউন্সিলিং এর পাশা পাশি অ্যান্টি ডিপ্রেশান্ট খেতে দেন। সেই সঙ্গে অনেক সময় রোগীকে মুড স্টেবিলাইজার দেন। যাতে ঘুম ভাল হয় তার জন্যও একটা ঘুমের বড়ি দেন। এবং রোগী আসতে আসতে অনেকটা ভাল থাকে তাতে। তবে হ্যাঁ, বাইপোলার পেশেন্টকে কিন্তু বুঝতে হয় যে তার  বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) হয়েছে। তাকে ডিপ্রেশান ও ম্যানিক স্টেজ এর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হয়, যখনই বোঝা যায়, ম্যানিক স্টেজ আসছে বা আসতে চলেছে, তখনই ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। নইলে জীবনে তার আরও অনেক ভুলের মাশুল  গোনার জন্য তৈরি হতে হয়। 

বাইপোলার ডিসঅর্ডার কি? আজ জানবো, কখনও হর্ষ কখনও বিষাদ, রোগের নাম বাইপোলার এর আদিপান্ত

তানজিন তিশা। ছবি – facebook.com

বাইপোলার ডিসঅর্ডার (Bipolar Disorder) আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে ২০১৩ সালে গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ নামে একটি গবেষণা করা হয়েছিল, উক্ত গবেষণা লব্দ ফলাফল থেকে জানা যায় যে, বাইপোলার প্রথম এবং দ্বিতীয় জনসংখ্যার প্রায় ১.২% হয়  ।

বাইপোলার ডিসঅর্ডারের সঠিক কারণ এখনো অজানা, তবে ধারণা করা হয়  জিনেটিক্স, পরিবেশ, মস্তিষ্কের গঠনের তারতম্য এবং স্ট্রেস এবং ট্রমা জাতীয় পরিবেশগত কারণগুলি   বাইপোলার ডিজ ওয়ার্ডার হবার ক্ষেত্রে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে থাকে। বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে গবেষণা এবং তা থেকে অধ্যয়নের ফলাফলগুলি প্রমাণ করেছে যে,

যাদের শর্তের সাথে প্রথম-ডিগ্রি সম্পর্কিত আত্মীয় রয়েছে, তাদের পিতা বা মাতা বা ভাইবোনদের মতো এই ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদিও পিতামাতাসহ দ্বিপথার ব্যাধিজনিত ভাইবোনরা নিজেরাই এই ব্যাধিটি বিকাশের সম্ভাবনা বেশি রাখে তবে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের পারিবারিক ইতিহাসের বেশিরভাগ লোকেরা এই অসুস্থতা বিকাশ করতে পারবেন না।

Its A Bangla Article Description’s of Bipolar Disorder.

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
©2021 All rights reserved © kalakkhor.com
Customized By BlogTheme
error: Content is protected !!

Discover more from কালাক্ষর

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading