সৃজনশীল বাংলা ব্লগ “কালাক্ষর” এর আজকের আয়োজন একটি বিশেষ টপিক নিয়ে। তা হল প্যারানর্মাল সাইকোলজি বা প্যারাসাইকোলজি — কি নাম শুনেই ঘাবড়ে গেছেন তাই না? বিলিভ মি আমি নিজেও ঘাবড়ে গিয়েছিলাম যখন ৬/৭ বছর আগে এই টপিক এর কথা শুনেছিলাম। আর আমার স্বভাব হল আমি যদি কোন কিছু তে ভয় পাই, তার চৌদ্দ গুস্টি এক সময় উদ্ধার করে ছাড়ি। এর কারন হল ঘাবড়ানো কোন কিছুতে আমার বিশেষ আগ্রহ থাকে। যাই হোক মুল প্রসংগে আসি। আমরা প্রায় সবাই সাইকোলজির নাম জানি।সাইকোলজি কী,সেটাও একটু-আধটু কারো অজানা নয়। কিন্তু যত নটখট হল এই প্যারানর্মাল সাইকোলজির বেলায়। আমরা আজ সেই নটখটের ই খটখটি বাজাবো।
ভুত কে আমরা কয়জন ই বা দেখেছি? হয়ত এক হাজারের এক জন ও নয়। কিন্তু আমরা ভুতের ভয়ে থেকেছি কিন্ত সবাই। কারন আমাদের মনে জোর করে ভুতের ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর তাতে আমাদের মনজগতে বাস্তবে ভুতের অস্তিত্ব আছে কি নেই সেই বিতর্কে যায় না। অন্ধকার ঘরে ইদুরের খুট খাট আওয়াজ শুনে আমরা ভুতের কাজ বলে এক কথায় মন কে বিলিভ করিয়ে ফেলি। আর তাই আমাদের মন জগতে প্যারানর্মাল সাইকোলজি এর গুরুত্বপুর্ন প্রভাব লক্ষ করা যায়।
প্যারা সাইকোলজি এর বিষয়বস্তু হল টেলিপ্যাথি থেকে শুরু করে ভবিষ্যতের জীনিস গুলো দেখতে পাওয়া। সাইকোকাইনেসিস বা বিশেষ ক্ষমতার বলে মানুষের শরীরকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা,পুনর্জন্ম বা আদৌ পুনর্জন্ম বলে কিছু হয় কিনা,এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মানুষ যে সমস্ত অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় সেগুলোই ।
প্যারাসাইকোলজির টপিক গুলো বৈজ্ঞানিক যুক্তি-বুদ্ধিওয়ালা মন দিয়ে বিচার করতে গেলে একটারও ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে না। কারন বিজ্ঞান প্যারাসাইকোজি কে বিলিভ না করে এগুলোকে অস্বীকার করে। আর বিজ্ঞান যেগুলোকে অস্বীকার করে আজগুবির তকমা দিয়ে উড়িয়ে দেয়, সেটাকেই প্যারাসাইকোলজি দৃঢ় ভাবে স্বীকার করে ন্যায় এবং তা চর্চার ক্ষেত্র করে মানুষের সামনে তুলে ধরে।
প্যারাসাইকোলজি চর্চা শুরু হয়েছে খুব বেশি দিন নয়। রবার্ট হেয়ার নামক এক লোক সর্ব প্রথম ১৮৫৩ সালে প্যারাসাইকোলজি নিয়ে গবেষণা করেন । এরপর যত দিন গেছে, এই প্যারাসাইকোলজি নিয়ে মানুষের চর্চার আগ্রহ বেড়েছে। আর ভূত,অদ্ভুত নিয়ে মানুষের আগ্রহ তো চিরকালীন।
মডেল – রোমানা সর্ণা । ছবি – কালাক্ষর ডেক্সমানুষের সহজাত স্বভাব হল যা কিছু সে জানে না, যার ব্যাখ্যা সে পায় না,তাকেই সে নানাভাবে জানতে চায়,তাকে নিয়ে ভাবতে চায়। তাই যত দিন গেছে ভূতুড়ে-অদ্ভুতুড়ের মিশেলে এই প্যারাসাইকোলজিতে মানুষ নানা ভাবে মজেছে। তবে হ্যাঁ,মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের শাখা যাকে বলে,তাতে কিন্তু প্যারাসাইকোলজি কোনোদিনই স্থান পায়নি। পাবার কথা ও না। বিজ্ঞান সব সময় বাস্তব জিনিসে যা চোখে দেখা যায় এবং যার অস্তিত্ব অনুভব করা যায় তাকে সমর্থন করে। তাই প্যারাসাইকোলজিকে মানুষ আগ্রহ দেখালেও একে খানিক সন্দেহের দৃষ্টিতেই দেখে এসেছে। সে কারনেই মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের চর্চায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনও প্যারাসাইকোলজি বিষয় হিসেবে স্থান পায়নি। এই নিয়ে যা কিছু টুকটাক কাজ,গবেষণা হয়েছে,সবই ব্যক্তিগত উদ্যোগে।আর সন্দেহের কারণও আছে। কারণ আজ পর্যন্ত এই প্যারাসাইকোলজি ( Parapsychology ) চর্চার ক্ষেত্রে ভুয়ো জিনিসপত্রের,ভাঁওতাবাজির অনেক খবর ই প্রকাশিত হয়েছে। প্যারাসাইজোলজি নিয়ে ফ্রডনেসের দায়ে ধরা পড়ে জেল খেটেছে একাধিক মানুষ।
তাই যদি আপনার অবিশ্বাস্য জিনিসের প্রতি বিশেষ আগ্রহ থেকে থাকে, তাহলে আপনি প্যারাসাইকোলজি বা প্যারানর্মাল সাইকোলজি (Paranormal Psychology) নিয়ে চর্চা করতে পারেন। তাতে আপনি একজন রীতিমতো বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠতেই পারেন।
বলা তো যায় না এই চর্চার কারনে এক সময় আপনিই হয়তো প্যারাসাইকোলজির কোনো এক বিশেষ তত্ত্ব আবিষ্কার করে ফেলতেই পারেন। তবে আমার নিজের ব্যাক্তিগত মত হল যে জিনিস বাস্তব সমর্থনের চেয়ে কল্পনাকে প্রধান্য দেয় তা গ্রহন না করাই ভাল। ভাল থাকবেন,
Leave a Reply