1. sjranabd1@gmail.com : Rana : S Jewel
  2. solaimanjewel@hotmail.com : kalakkhor : kal akkhor
যুগোস্লাভিয়া: হারিয়ে যাওয়া এক দেশের ইতিহাস - কালাক্ষর
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন

যুগোস্লাভিয়া: হারিয়ে যাওয়া এক দেশের ইতিহাস

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আধুনিক রাস্ট বিজ্ঞানের পরিভাষায় কোন জাতী এক হয়ে একটি রাস্ট গঠন করতে পারে, সমমনা জাতী গুলো এক হয়ে একটি ফেডারেল রাস্ট বানাতে পারে, সেই রাস্ট ইন্টারন্যাশনাল রাজনিতিতে দুর্নিবার শক্তি হিসাবে আবির্ভুত হতে পারে, উদাহরণ সরুপ বলা যায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, কিংবা বর্তমান কালের সুপার পাওয়ার মার্কিন যুক্তরাস্ট (৫০ টি অঙ্গরাজ্য) কিংবা সাবেক বিশ্ব সুপার পাওয়ার যুক্তরাজ্য (তিন টি রাজ্য) এর কথা, এই রাস্ট সমুহের ইন্টারন্যাশনাল রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের কথা আমরা কম বেশি সবাই জানি, কিন্তু যদি আপনার সৃতির পাতা আরো একটু উল্টান তবে আপনার মনে বর্তমানে অস্তিত্বহীন আরো একটি দেশের নাম চলে আসবে,যার নাম যুগোস্লাভিয়া।

যুগোস্লাভিয়া বিশ্ব রাজনীতিতে আরো একটি মধ্যম সারির শক্তি হিসেবে প্রভাব বিস্তার করেছিল,সারা বিশ্ব যখন ধনবাদী মার্কিন যুক্তরাস্ট আর কমিউনিস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন এর ছায়ায় মেরুকরন শুরুর মাধ্যমে স্নায়ু যুদ্ধাবস্তায় জেকে বসে তখন এই দুই মোড়লের বাইরে আরো একটি শক্তি নিজেদের সবার থেকে আলাদা থাকার নাম করে জোট নিরেপক্ষ আন্দোলন শুরুর মাধ্যমে নিজেদের প্রভাব বলয় তৈরি করে, আর এই জোট নিরেপক্ষ আন্দলন এর প্রবক্তা ছিলেন তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার প্রসিডেন্ট মার্শাল টিটো। আজ সৃজনশিল ব্লগ কালাক্ষর এর জাতীসত্বা বিভাগের আজকের আলোচনায় থাকছে যুগোস্লাভিয়ার উত্থান এবং পতনের ইতিহাস।

যুগোস্লাভিয়া গঠনের প্রারম্ভিক ইতিহাস

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির মধ্য দিয়ে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের পতন হয়। ছয় জাতিগোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে আপোষ করে নতুন এক রাষ্ট্র গঠন করে – যুগোস্লাভিয়া। সোভিয়েত ইউনিয়ন জন্ম নেবারও আগে এই যুগোস্লাভিয়ার জন্ম হয়েছিল। তখনকার সময়ে ইউরোপের অন্যতম পরাশক্তি ছিল এই যুগোস্লাভিয়া। এমনকি বিশ্ব রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল এই দেশটি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর যুগোস্লাভিয়ার উত্থান হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই দেশটির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা অনেকটা নড়বড়ে হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে উনিশ শতকের নব্বইয়ের দশকেই যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন ভেঙ্গে নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

১/২টা নয় বরং ৬টা দেশ স্বাধীন আর সার্বভৌমত্ব নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। সেই ৬টা দেশের মধ্যে আবার একটা দেশ ভেঙ্গে দুটো আলাদা দেশ গঠিত হয়েছে। সবগুলো দেশই এখন বিশ্ব মানচিত্রের বুকে ঠায় করে নিয়েছে। কিন্তু হারিয়ে গেছে যুগোস্লাভিয়া নামক দেশটি। এমনকি যুগোস্লাভিয়া নামটিও হারিয়ে গেছে।
সে সময় এক সরকারের অধীনে থাকার ব্রত নিয়ে তিনটি যুক্তরাষ্ট্র সম্মিলিতভাবে যুগোস্লাভিয়া নামক দেশটির জন্ম দিয়েছিল। যুগোস্লাভিয়া শব্দটির আভিধানিক মিনিং হল দক্ষিণ স্লাভদের ভূমি। কেননা,যদি মানচিত্র ঘাটতে যান তবে দেখতে পারবেন পূর্ব ইউরোপে বসবাস কারি বেশীরভাগ জনগনই বৃহত্তর স্লাভ জাতির অংশ। যুগোস্লাভিয়া মোট তিনটি ধাপে বা তিন বার যুক্তরাষ্ট্র গঠন করেছিল।১৯১৮ সাল থেকেই যুগোস্লাভিয়ার সূচনাকাল শুরু হলেও প্রথমবার ১৯২৯ সালেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে পড়ে এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আবার তা গড়ে উঠে। আর তৃতীয়বার যুগোস্লাভিয়া গঠিত হয় এপ্রিল ২৭, ১৯৯২ সালে। শুরুতে ৯৫, ৫৭৬ বর্গমাইল বা ২,৪৭, ৫৪২ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ছিল এই যুক্তরাষ্ট্র।

  1. আফিম যুদ্ধের ইতিহাস
  2. উইঘুর দের বেদনাদায় ইতিহাস
  3. কুর্দি- রাজ্যহারা এক সংগ্রামী জাতির ইতিহাস 
  4. মায়া সভ্যতা: প্রাচীন মায়ান সাম্রাজ্য ও মায়া সভ্যতার ইতিহাস

যুদ্ধোত্তর সমাজতান্ত্রিক ফেডারেল রিপাবলিক অফ যুগোস্লাভিয়া এর আয়তন ছিল ৯৮,৭৬৬ বর্গমাইল বা ২,৫৫,৮০৪ বর্গকিলোমিটার। এবং ১৯৯১ সাল অবধি এর জনসংখ্যা ২৪ মিলিয়নে রূপ নিয়েছিল। সার্বিয়া এবং মন্টিনিগ্রো বাদেও এই ফেডারেশনের আওতায় আরো চারটি দেশ ছিল যা এখন স্বাধীন দেশ বলে স্বীকৃত – বসনিয়া ও হার্জেগোবিনা, ক্রোয়েশিয়া, উত্তর মেসিডোনিয়া এবং স্লোভেনিয়া।তৃতীয় ধাপে যুগোস্লাভিয়ার জনসংখ্যা ছিল ৪৫ শতাংশ এবং এলাকা ৪০ শতাংশ ছিল পূর্বের তুলনায়। তখন মাত্র দুটি দেশই যুগোস্লাভিয়া নামটাকে ধারণ করেছিল – সার্বিয়া এবং মন্টিনিগ্রো। তবে ২০০৩ সালে তারা যুগোস্লাভিয়া নামটিকে ছেড়ে দিতে রাজি হয় এবং ২০০৬ সালে ইউনিয়নটি ভেঙ্গে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়।

যুগোস্লাভিয়ার সূচনা

১৯১২-১৩ সালে বলকান যুদ্ধের মাধ্যমে অটোমান শাসনের অবসান ঘটে। আর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। প্যারিস শান্তি সম্মেলনে বলকান অঞ্চলের নতুন মানচিত্র গঠন করা হয়। সেখানে সার্বিয়া, ক্রোয়েটস এবং স্লোভেনিজদের নতুন রাজ্য গঠন হয়েছিল। যার মধ্যে সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো (সার্বিয়ান অধিষ্ঠিত মেসিডোনিয়াসহ), ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোবিনা, স্লোভেনিয়ান অস্ট্রিয়ান অঞ্চল এবং দানিয়ুব নদীর তীরঘেষা হাঙ্গেরির ভূমিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

নতুন গঠিত এই বহুজাতিক এই রাস্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রচুর সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই শুরুর দিকে নানান ঝুট ঝামেলা পোহাতে হয়। এর পর এই স্ব অনাকাক্ষিত রাজনৈতিক ঝুট-ঝামেলা পেরিয়ে রাজা প্রথম অ্যালেক্সান্ডার ১৯২৯ সালে রাজকীয় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।রাজা প্রথম অ্যালেক্সান্ডার তখন এই অঞ্চলের নাম পালটে নতুন নাম দেন যুগোস্লাভিয়া। প্রথম ধাপের ফেডারেশনে যুগোস্লাভিয়া ১৯৪১ সাল অবধি টিকেছিল। কারন এর পর দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের ডামাডোলে জার্মান সেনারা ১৯৪১ সালের এপ্রিল মাসে যুগোস্লাভিয়া আক্রমণ করলে যুগোস্লাভিয়া দেশটির কাঠামো সাময়িকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।

১৯৪৬ সালে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জোসেপ টিটোর নেতৃত্বে জার্মান শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে সমাজতান্ত্রিক যুগোস্লাভিয়া গঠন করা হয়। যুদ্ধের সময় যুগোস্লাভিয়া ভেঙ্গে পড়লে বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি এবং ইতালি- এর অনেক জায়গা দখল করে নিয়েছিল। টিটোর নেতৃত্বে ফের সেগুলো অধিগ্রহণ করা হয় এবং সঙ্গে পূর্বের আয়ত্তাধীন ভূমি নিয়ে যুগোস্লাভিয়া পুনরায় গঠিত হয়।

তবে এবার রাজ্য গঠিত না হয়ে ছয়টি নামেমাত্র প্রজাতন্ত্রের ফেডারেশন গঠন করা হয় – ক্রোয়েশিয়া, মন্টিনিগ্রো, সার্বিয়া, স্লোভেনিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোবিনা এবং মেসিডোনিয়া (বর্তমান উত্তর মেসিডোনিয়া)। সোভিয়েত ইউনিয়নের আদর্শে টিটোর নেতৃত্বে গড়া কমিউনিস্ট পার্টির যুগোস্লাভিয়া, বিশ্বের রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে শুরু করে। টিটোর মৃত্যু যুগোস্লাভিয়ার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। টিটোর মৃত্যুতে যুগোস্লাভিয়ায় জাতীয়তাবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল।

স্লোভোডান মিলসোভিক সার্বিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিলে সামরিক যুগোস্লাভিয়ার পতন ঘটে। তার লক্ষ্য ছিল গ্রেটার সার্বিয়া গঠন করার; যা সফল হয়নি। এরই সুবাদে ১৯৯১ সালের ২৫ জুন স্লোভেনিয়া এবং ক্রোয়েশিয়া যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন থেকে নিজেদের বিচ্ছেদ ঘোষণা করে। একইভাবে মেসিডোনিয়া (বর্তমানে উত্তর মেসিডোনিয়া) একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর সেই পথ অনুসরণ করে বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

পরের বছর ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে বসনিয়াকস (মুসলিম) এবং ক্রোয়েটরা পৃথকীকরণের পক্ষে ভোট দেয়। স্লোভেনিয়াতে যুগোস্লাভ এবং সার্বিয়ান সামরিক বাহিনীর আক্রমণ ব্যর্থ হয়। তবে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে এই যুদ্ধ দীর্ঘসূত্রিতা লাভ করে। এবং তা বসনিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করলে যুদ্ধ আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।
যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন এর ভিতরে থাকা জাতি গুলোর মধ্যে এক জঘন্য গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই সময় সার্বিয়া এবং মন্টিনিগ্রো মিলে ১৯৯২ সালের ২৭ এপ্রিল একটি নতুন আর একটি সংবিধান রচনা করার মাধ্যমে যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন নামে একটি ফেডারেল নাম গ্রহণ করে। ক্রোশিয়া এবং বসনিয়া হার্জোগভিনিয়া আলাদা হয়ে গেলে ১৯৯৫ সাল নাগাদ যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশনের সকল গৃহযুদ্ধের অবসান হয়। কিন্তু ১৯৯৯ সালে কসোভো সার্বিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতার দাবী করলে ফের যুদ্ধ শুরু হয়। ২০০০ সালে নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে। মিলসোভিক ক্ষমতার আসন থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়। যুগোস্লাভিয়া আবারও নিজের হারানো ঐতিহ্য ফিরে পায়। এই সময় আন্তর্জাতিক ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায় যুগোস্লাভিয়া।

শেষমেশ সার্বিয়া এবং মন্টিনিগ্রো অনেক চেষ্টা করেও এই ফেডারেশনকে টেকাতে না পেরে ২০০৩ সালে যুগোস্লাভিয়া নামটিকে ত্যাগ করেও ইউনিয়নটিকে বাঁচিয়ে রাখে। পরে ২০০৬ সালে ইউনিয়নটি পুরোপুরি ভেঙ্গে গিয়ে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সার্বিয়া এবং মন্টিনিগ্রো। যুগোস্লাভিয়ার পতন হয় কিন্তু থামে না গৃহযুদ্ধ আর স্বাধীনতার লড়াই।

কসোভো তখন সার্বিয়ার অধীনতা থেকে মুক্ত হবার জন্যে প্রতিনিয়ত লড়াই করেই যাচ্ছে। দুই বছরের মধ্যেই সার্বিয়া দেশটি ভেঙ্গে গিয়ে আবারও দুটি আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সার্বিয়া এবং কসোভা। যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন ভেঙ্গে গিয়ে সাতটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয় পৃথিবীর বুকে। আর যুগোস্লাভিয়া নামটি হারিয়ে যায় কালের অতলে।

রাজা অ্যালেক্সান্ডার/প্রথম অ্যালেকজান্ডার ১৮৮৮-১৯৩৪ জন্ম হয়েছিল সার্বিয়ার এক রাজকীয় পরিবারেে,প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সার্বিয়ার রাজপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পূর্বে যৌবনের কিছু সময় তিনি নির্বাসিত জীবনযাপন করেছিলেন। ১৯২১ সালে সার্ব, ক্রোয়েট এবং স্লোভেনিজদের রাজ্য ঘোষণা করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে রাজ্যের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর প্রতিযোগিতা তাকে হতাশ করে ফেলে।

যার ফলশ্রুতিতে ১৯২৯ সালে তিনি একনায়কতন্ত্র ঘোষণা করেন এবং যুগোস্লাভিয়া গঠন করেন। তিনি যুগোস্লাভিয়া গঠনের মাধ্যমে পৃথক পৃথক গোষ্ঠীগুলোকে একত্রিত করে বিশ্বের বুকে এক শক্তিশালী ফেডারেশন গঠন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৩৪ সালে ফ্রান্স সফরকালে আততায়ীর দ্বারা নিহত হন তিনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন জার্মান নাৎসি বাহিনীর কাছে যুগোস্লাভিয়ার শাসকরা মাথা নত করে নিয়েছে। সেই সময় টিটো কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব দিয়ে ভেঙ্গে পড়া যুগোস্লাভিয়াকে পুনরায় দাঁড় করিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার নতুনভাবে গড়া যুগোস্লাভিয়া ফেডারেশন প্রধান নেতায় পরিণত হয়েছিলেন তিনি। প্রথম অ্যালেকজান্ডারের মতোই পৃথক পৃথক জাতিকে একত্রিত করে তিনি দেশকে পুনরায় ক্ষমতাশালী আর শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন।

পূর্ব ইউরোপের অন্যান্য দেশের উপর আধিপত্য বিস্তার করা কে কেন্দ্র করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ছিল মার্শাল জোসেফ টিটোর যুগোস্লাভিয়ার। মজার ব্যাপার হল দুটি দেশেই ই ছিল কমিউনিজম শাসন ব্যাবস্থা। কিন্তু দুটি ফেডারেশনই কমিউজমকে ধারণ করলেও এদের মতবাদ ছিল ভিন্ন। কিন্তু মার্শাল টিটোর মৃত্যুতে যুগোস্লাভিয়া আবারো নড়বড়ে হয়ে পড়ে। জাতীয়তাবাদ ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠে পৃথক পৃথক জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে। ফলে যুগোস্লাভিয়ার পতন হয়।

বর্তমান অবস্থাঃ-

প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধগুলো এখন শেষ হয়ে গেছে। এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে কি কেউ আদৌ বিজয়ী হয়েছে? ভয় আর সহিংসতার মধ্য দিয়ে জাতিগত মানচিত্র পুনরায় বিভক্ত হয়েছে। সার্ব,ক্রোট, মুসলিম, এবং অন্যান্য সকল জাতিগোষ্ঠী চেয়ে চেয়ে এটাই দেখলো যে, শতাব্দী প্রাচীন সম্প্রদায় আর গোত্রগুলো কিভাবে চিরতরে মুছে গেল কয়েক টুকরো জমির জন্যে। হয়তো তারা জাতিগত ভাবে এক জাত ছিল কিন্তু তারা প্রত্যেকেই আসলে সমানভাবে অপরাধী ছিল।

প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার যুদ্ধাপরাধের দায়ে ১৫১ জন রাজনৈতিক এবং সামরিক ব্যক্তিত্বকে বর্তমানে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা এখন সাজা কাটছে কিন্তু নিরীহ মানুষগুলো কোনো কারণ ছাড়াই তাদের প্রাণ হারিয়েছিল। হয়তো সেই নিরীহ মানুষদের অভিশাপে যুগোস্লাভিয়া পরপর তিনবার চেষ্টা করেও টিকতে পারেনি। শেষমেশ যুগোস্লাভিয়া নামটাই ধারণ করতে পারেনি। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
©2021 All rights reserved © kalakkhor.com
Customized By BlogTheme
error: Content is protected !!

Discover more from কালাক্ষর

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading