1. sjranabd1@gmail.com : Rana : S Jewel
  2. solaimanjewel@hotmail.com : kalakkhor : kal akkhor
ময়ূর সিংহাসনঃ মুঘলদের অতি গর্বের জিনিসটির শেষ পরিনতি কি হয়েছিল? - কালাক্ষর
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:১৫ অপরাহ্ন

ময়ূর সিংহাসনঃ মুঘলদের অতি গর্বের জিনিসটির শেষ পরিনতি কি হয়েছিল?

  • Update Time : বুধবার, ২ জুন, ২০২১

কথায় আছে পৃথিবীর কোন কিছুই চিরস্থায়ী নয়। কোন কিছুর সৃষ্টি যেমন আছে ধ্বংস ও তেমন আছে। জগতের এই ভাঙ্গা গড়ার খেলার মাঝে কিছু মানুষ তার স্থিয় কর্মের মাধ্যমে সৃষ্টি করে ইতিহাস। যারা ইতিহাসের পাতায় যারা ভাল কাজ করে নাম লেখায় তাদের নাম মানুষ ভক্তি ভরে স্বরণ করে। আর যারা খারাপ কাজ করে নাম লেখায় তাদের নাম মানুষ ঘৃণা ভড়ে স্বরন করে। পুজনীয় কিংবা ঘৃণিত দুই মাধ্যমেই  ভারত বর্ষের ইতিহাস অনেক সম্রদ্ধ্য। হিমালয় অবহাহিকায় গঠিত এই মানব ভুমির পাতায় পাতায় ইতিহাস মোড়ানো, এই ভুমির অলিতে গলিতে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। আর সেই ইতিহাস মোড়ানো পাতার খাজ থেকে সৃজন শীল বাংলা ব্লগ “কালাক্ষর” এ আজ আমরা তুলে আনতে চেষ্টা করবো এমন একটি ব্যাক্তির নাম যে ভারত বর্ষ কে সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে নিয়ে গেছেন অনন্য অবস্থানে। আর তার স্থাপত্য কর্মের দরুণ আজো মানুষ শ্রদ্ধা ভড়ে স্বরণ করে।

সম্রাট শাহ জাহান স্ত্রীর মৃত্যুশোকে কাতর এক সম্রাট তার সমাধির উপর বিখ্যাত তাজমহল নির্মাণ করে যেমন নিজেকে ইতিহাসের পাতায় অমর করে রেখেছেন, তেমনি আগ্রার দুর্গ কিংবা দিল্লীর সুবিশাল জামে মসজিদের তৈরির মাধ্যমেও নিজেকে অন্যান্য মুঘল সম্রাটদের তুলনায় আলাদাভাবে পরিচিত করতে সক্ষম হয়েছেন। বলা হয়ে থাকে,শাহ জাহানের শাসনামলেই মুঘল স্থাপত্যবিদ্যা সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধি লাভ করে। আর এই সমৃদ্ধির প্রধান পৃষ্ঠপোষক যে সম্রাট শাহজাহান ছিলেন তা কাউকে বলে দিতে হবে না। সম্রাট শাহজাহানের অসংখ্য কৃর্তি নিয়ে মানুষ আলোচনা করলেও একটি মহাকীর্তি নিয়ে তূলনামূলক কম আলোচনা হয়– আর তা হল – ময়ূর সিংহাসন।

সম্ভবত ভারতবর্ষে এর উপস্থিতি না থাকার কারণেই হউক কিংবা ধংস প্রাপ্ত হবার কারনেই হউক মানুষ খুব একটা শাহজাহানের এই মহাকীর্তি নিয়ে তূলনামূলক ভাবে কম আলোচনা করে থাকে। তার পরেও সম্রাট শাহ জাহানের শাসনামলে নির্মিত  তাজমহল কিংবা অন্যান্য স্থাপত্য ও কীর্তির তুলনায় এই ময়ুর সিংহাসনের গুরুত্ব কিংবা মূল্য কিন্তু কোনো অংশেই কম নয়!

সম্রাট শাহজাহানের ময়ুর সিংহাসনঃ

সম্রাট শাহ জাহান কেন অন্য কোন প্রানী ব্যাবহার না করে তার সিংহাসনে ময়ূর ব্যবহার করলেন? তা নিয়ে পাঠক মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে। আর এর উওর হল  মুঘল আমলে শিল্প-সাহিত্যে এক অনন্য স্থান ছিল ময়ূরের। ময়ুরের প্রতি মুঘলদের যে আকর্ষণ ছিল তা যা অন্য কোনো প্রাণীর ছিল না বলেই মুঘল আমলে অঙ্কিত চিত্রকর্মগুলোতে সুনিপুণভাবে ময়ূরের অবয়ব ফুটিয়ে তোলা হতো। তখনকার সাহিত্যেও ময়ূরকে এক আধ্যাত্মিক রূপ দান করা হয়। এর কারণ হিসাবে মুঘলদের অধ্যাতিক রুপ কে কল্পনা করা হয়, শামস-ই-তাবাসি নামক এক কবি তার কাব্যগ্রন্থে দাবি করেন যে, বেহেশতের সবচেয়ে উঁচু স্তরে ময়ূর আসীন থাকবে। যেহেতু তখনকার সময়ে ময়ুর পাখিকে ধর্মীয়ভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভাবে ভাবা হতো, তাই মুঘল শাসনামলে মুঘল জন সাধারণের বিশ্বাস ছিল যে, কোনোভাবে এই পাখির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তা পরকালে ভালো কিছু করবেন। এজন্যই ধারণা করা হয়ে থাকে সম্রাট শাহ জাহান ধর্মীয় কারণেই তার বিখ্যাত সিংহাসনের পেছনে দুটো ময়ূরের অবয়ব তৈরি করিয়ে নেন। আর এই পাখির নামেই পরবর্তীতে সিংহাসনটি পরিচিতি লাভ করে।

সম্রাট শাহজাহানের ময়ুর সিংহাসনের নির্মান উপকরণঃ

সিংহাসনে কী পরিমাণ স্বর্ণ ও হীরে-জহরত ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটি শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। আনুমানিক ১,১৫০ কেজি স্বর্ণ ও প্রায় ২৩০ কেজি বিভিন্ন মহামূল্যবান পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল এই শাহজাহানের রাজকীয় এই সিংহাসন তৈরিতে। তিমুর রুবি ও বিখ্যাত কোহিনূর হীরার মতো দুর্লভ হীরার ব্যাবহার ময়ুর সিংহাসন কে আভিজাত্যের উচ্চ শিখ্ড়ে নিয়ে যায়। তবে এখানে লক্ষণীয় যে, তাজ মহল নির্মাণের ক্ষেত্রে যেমন দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী শাহজাহান নিয়ে এসেছিলেন, ময়ুর সিংহাসন তৈরির বেলায় সম্রাট শাহজাহান তা করেন নি, বরং বিভিন্ন যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে যেসব দামী ও দুর্লভ অলংকার মুঘল রাজকোষে জমা হয়েছিল, সেগুলো দিয়েই এই সিংহাসনের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। ১১৬টি পান্না, ১০৮টি রুবি ও আরও অসংখ্য অত্যন্ত দুর্লভ আর মূল্যবান পাথর ব্যবহার করা হয়, বিখ্যাত এই সিংহাসনের পেছনে যে দুটো ময়ূরের লেজ ছিল ছড়ানো, যার ফলে ময়ুর সিংহাসনের সৌন্দর্য  বহুগুণ বেড়ে যায়।

ময়ূর সিংহাসন

ছবি – ময়ূর সিংহাসনে বসে আছেন সম্রাট শাহজাহান – সোর্স – উইকিপিডিয়া

নবী হযরত সোলায়মান (আ.)-কে অনুসরণের চেষ্টা করতেন সম্রাট শাহ জাহান। কথিত আছে, নবী হয্রত সোলায়মান (আঃ) এর সুবিশাল সাম্রাজ্যের পাশাপাশি একটি রাজকীয় সিংহাসন ছিল, আর এই ঘটনা ই মুঘল সম্রাট শাহ জাহানকে বেশ প্রভাবিত করে। এজন্য তিনি নিজেও নবী হযরত সোলায়মান (আ. ) এর ন্যায় বিশাল সাম্রাজ্যের পাশাপাশি তার মত একটি রাজকীয় সিংহাসনে বসে সাম্রাজ্য পরিচালনার স্বপ্ন দেখতেন। এছাড়াও শাহজাহান ময়ুর সিংহাসন ব্যাবহার করার মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের পরিচয়বাহী একটি কীর্তি হিসেবে সবার কাছে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন, মুঘলদের ঐশ্বর্য সম্পর্কে বাইরের দুনিয়াকে ধারণা দেবে– সম্রাট শাহ জাহানের মনে এই ধরনের চিন্তাও ছিল বলে ধারনা করা হয়।

১৬২৮ সালে যেদিন সম্রাট শাহ জাহান তার পিতার স্থলে সাম্রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, সেই রাজকীয় অভিষেকের দিন ই  প্রথম ময়ুর সিংহাসন প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়। মুঘল সম্রাজ্যের ভিতর বাছাই করা সেরা স্বর্ণকার ও জহুরিদের নিয়ে এসে তাদের মাধ্যমে প্রায় সাত বছর ধরে এই ময়ুর সিংহাসন তৈরি করে নেয়া হয়েছিল।

এবার বিদেশি মানুষের ভাষ্যে প্রখ্যাত ময়ূর সিংহাসন সম্পর্কে জানা যাক। জিন-ব্যাপ্টিস্ট টাভের্নিয়ার নামের একজন ফরাসি অলংকারিককে আমন্ত্রণ জানান সম্রাট শাহ জাহানের পুত্র সম্রাট আওরঙ্গজেব। ১৬৬৫ সালে তিনি ভারতবর্ষে আসেন এবং রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করে ময়ূর সিংহাসন প্রত্যক্ষ করার পর তার চোখ কপালে উঠে যায়। তার ভাষ্যে,

ঐতিহাসিক ময়ুর সিংহাসনটি ছিল বিছানাকৃতির। ময়ুর সিংহাসনের খাঁটি সোনার তৈরি চারটি পায়া ছিল, সিংহাসনের উপরের ছাউনি হিসেবে ব্যবহার করা বহুমূল্যমানের কাপড়টি ধরে রাখতে বারটি ছোট খুঁটি ছিল। আর এই বারোটি খুঁটি ছিল সবচেয়ে মূল্যবান, কারণ সেগুলোতে বিভিন্ন দুর্লভ পাথর ও হীরা ব্যবহার করা হয়েছিল।

মুঘল সম্রাট শাহ জাহানের দ্বারা নির্মিত সম্রাটদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত দিওয়ান-ই-খাসে সাধারণত এই সিংহাসন রাখা হতো। কিন্তু অনেক সময় দিওয়ান-ই-আমেও একে নিয়ে আসা হতো। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও উৎসবের জন্য যখন সম্রাট যখন দিল্লি থেকে আগ্রায় যেতেন তখন তার সাথে এই মহামুল্যবান ময়ুর সিংহাসনও নিয়ে যাওয়া হত।

নাদের শাহ যখন পারস্যের সিংহাসনে বসেন, তখন তার সামনে মুর্তমান আতঙ্ক হিসেবে আফগান হোতাকি বাহিনী এসে পড়ে। তাই নাদের শাহের সামনে  আফগানিস্তানের এই ‘হোতাকি বাহিনী’ কে দমন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।  নাদের শাহ ইস্পাহান দখল করার পর হোতকী বাহিনীকে চিরতরে নির্মূল করার সিদ্ধান্ত নেন। এই কারনে নাদের শাহ হোতকী বাহিনী কে হটানোর উদ্দেশ্যে আরও বেশি সৈন্যসহ আক্রমণ করেন এবং যুদ্ধে পরাজিত হয় হোতকি বাহিনী এক সময় কান্দাহার পেরিয়ে মোগল সাম্রাজ্যে প্রবেশ করে। নাদের শাহ তখন মোগল সম্রাট মুহাম্মদ শাহকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে হোতাকিদের হস্তান্তর করতে বলেন, কিন্তু মোগল সম্রাট তা থেকে বিরত থাকেন। এতে নাদের শাহ আরও বেশি করে ক্রোধান্বিত হন এবং বড় সেনাবাহিনীসহ মোগল সাম্রাজ্যে আক্রমণ করেন। সম্রাট শাহ জাহান কিংবা সম্রাট আকবরের সময় মোগল সেনাবাহিনী যেরকম শক্তিশালী ছিল, সম্রাট আওরংগজেবের মৃত্যুর পর তার জৌলস কমতে কমতে মুহাম্মদ শাহ সময় তা একেবারে জৌলুস হয়ে যায়। সুসংঘটিত নাদের শাহের বাহিনীর সামনে এক কালের দুর্ধষ কিন্তু তখন কার মিম্রয়নমান মোগল সেনাবাহিনী টিকতে পারেনি। ফলে মোঘল রা যুদ্ধে পরাজীত হয় আর নাদের শাহ যুদ্ধে জিতে ১৭৩৯ সালের মার্চে তিনি দিল্লি দখল করেন।

পারস্যের অধিপতি নাদের শাহ বুদ্ধিমান ছিলেন। তিনি মোগল সাম্রাজ্যের মতো বিশাল সমৃদ্ধ এলাকা তার দখলে চলে আসলেও তিনি তার মূল এলাকা ইরান অরক্ষিত রেখে দিল্লীর সিংহাসন দখল করতে চাননি, কারণ তাতে করে তার মূল সাম্রাজ্য বেহাত হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকতো কারণ তখন অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নাদের শাহ কে হটিয়ে অন্য কারও সিংহাসন দখলের সম্ভাবনা ছিল আর তাতে নাদের শা আম ছালা দুইটাই হারাতেন। তাই নাদের শাহ একটি ফন্দি আটলেন, মুঘল সাম্রাজ্যের অধিপতি মুহাম্মদ শাহের সাথে সন্ধি করেন এবং মোহাম্মদ শাহ কে তার সাম্রাজ্য ফিরিয়ে দেন। এই সন্ধি অনুসারে মোগলদের রাজ কোষে যেসব মুল্যবান সম্পদ ছিল তার বড় অংশ হস্তান্তর করতে নাদের শাহের কাছে বাধ্য হয় মোহাম্মদ শাহ। যার মধ্যে ময়ূর সিংহাসনও ছিল। এভাবেই অত্যন্ত দামী ও ঐতিহ্যবাহী ময়ূর সিংহাসন মুঘলদের হাতছাড়া হয়ে যায়।

নাদের শাহ্ পারস্যে ফিরে গেলে কয়েক বছর পর দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন এবং নাদের শাহের রাজপ্রাসাদে বেশ অরাজকতা শুরু হয়। এই অরাজকতার ভিতরে রাজপ্রাসাদে লুটের ঘটনা ঘটে। অনেকের মতে, অনাকাঙ্ক্ষিত এই অরাজকতার মাঝে রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করে লুটেরা ব্যক্তিরা ময়ূর সিংহাসন ভেঙে টুকরো টুকরো করে বাইরে নিয়ে গিয়ে চড়া দামে বিক্রি করে দ্যায়। আবার অনেকের মতে, নাদের শাহ্ যখন ভারতবর্ষ থেকে ময়ূর সিংহাসন নিয়ে যান, যাবার সময়েই তিনি ভেঙে টুকরো টুকরো করে হাতির পিঠে ইরানে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেন এবং পরে লুটেরা ব্যক্তিরা ইরানের রাজপ্রাসাদ থেকে এই টুকরোগুলোই লুট করে। তবে মোগল সাম্রাজ্যের অনুকরণে পরবর্তীতে ইরানেও ময়ূর সিংহাসন তৈরি করা হয়, যেটি এখন তেহরান যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ব্রিটেনের একটি যাদুঘরে ময়ূর সিংহাসনের একটি পায়া সংরক্ষিত আছে।

ময়ূর সিংহাসন ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের জৌলুস তুলে ধরা এক কালজয়ী কীর্তি। সময়ের সাথে সাথে মোগল সাম্রাজ্যের মধ্যে পরিবর্তন আসে, একসময়ের পরাক্রমশালী সাম্রাজ্য শক্তি হারিয়ে ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে থাকে। মোগলদের গর্বের ময়ূর সিংহাসনও হাতছাড়া হয়ে যায় বিদেশি শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে। ময়ূর সিংহাসন যতই লুটেরাদের হাতে ক্ষত-বিক্ষত হোক, যতই বিদেশি শক্তির হাতে অর্পিত হোক না কেন, এই অনিন্দ্যসুন্দর কীর্তির জন্য ইতিহাস সবসময় সম্রাট শাহ জাহানকেই স্মরণ করবে।

This Bengali article discusses the history of the famous Peacock Throne of India during the Mughal rule of Emperor Shah Jahan.

Reference:

১) India’s Peacock Throne – ThoughtCo

২) The Peacock Throne of Shah Jahan – Daily Art Magazine

৩) Thrones of India: From Shah Jahan’s Peacock Throne to Tipu Sultan’s Tiger Thron – Sahapedia

৪) The Peacock Throne: 5 amazing facts about the most expensive piece of furniture ever made – The Mughals of India

৫) History Behind The Peacock Throne | The Greatest Throne of all time – Reckon Talk

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
©2021 All rights reserved © kalakkhor.com
Customized By BlogTheme
error: Content is protected !!

Discover more from কালাক্ষর

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading