1. sjranabd1@gmail.com : Rana : S Jewel
  2. solaimanjewel@hotmail.com : kalakkhor : kal akkhor
কিউবান বিপ্লবের ইতিহাস ( পর্ব - ১) - কালাক্ষর
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন

কিউবান বিপ্লবের ইতিহাস ( পর্ব – ১)

  • Update Time : বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২১

ইতিহাস ডেক্সঃ- সৃজনশীল ব্লগ কালাক্ষর এ আজকেই আলচ্য বিষয়বস্তু হল ইতিহাস- ইতিহাস এমন এক পাঠ যা থেকে মানুষ শিক্ষা নিতে পারে- ভুল সংশোধন করতে পারে- কিংবা নিজেদের সংগঠিত করতে পারে- প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সরবিন্দু বংপাধ্যায় একটা কথা প্রায়সই বলতেন তা হল যে জাতীর ইতিহাস নেই সেই জাতীর ভবিষ্যৎ নেই, তিনি কেন এই কথা বলতেন তা বোঝাতে আসা করি কাউকে বলে দিতে হবে না- যাই হোক আজ আমরা সেই ইতিহাস নিয়েই ত্যানা প্যাচাবো- যদিও তা ভিন দেশের তার পরেও আজকের আলোচনার বিষয় বস্তু থেকে বাঙ্গালী নিজেদের হিসেব মিলিয়ে দেখতে পারেন –

কিউবান বিপ্লব

বলভেশিক দের দ্বারা রুশ বিপ্লবের পর থেকেই তাবৎ দুনিয়ার নানা প্রান্তে বিপ্লবীরা আন্দোলনের প্রধান মাধ্যম সসস্ত্র বিপ্লবের প্রতি বিশেষভাবে উৎসাহী হয়ে উঠে। এদের লক্ষ ছিল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা- আর এই জন্য মার্ক্সবাদী বিপ্লবীরা পৃথিবীর আনাচে কানাচে সক্রিয় হয়ে উঠে। আর এর ধারাবাহিকতায় সমাজতন্ত্র গঠনের জন্য সৃষ্ট আন্দলনের ঢেউ এসে লাগে পুঁজিবাদী আমেরিকার একেবারে নাকের ডগায় অবস্থিত কিউবাতে। বিপ্লবের যে সব ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসের মোড় পরিবর্তন করেছে,কিউবান বিপ্লব সেই সব বিপ্লবের অন্যতম অগ্রপথিক হিসাবে পরিগনিত হয়। কিউবার বিপ্লবী নেতা কমরেড ফিদেল কাস্ত্রোর হাত ধরে কিউবায় সমাজতন্ত্রের বীজ রোপিত হয়।

কিউবান বিপ্লবের অগ্রপথিক বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর অন্যতম সহযোগী হিসেবে ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন বিপ্লবের আরেক প্রভাত পুরুষ কমরেড চে গুয়েভারা। মুলত ফিদেল ক্যাস্টো এবং চে গুয়েভারা এর ঐকান্তিক ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই কিউবাতে সমাজতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। আর তাই কিউবান বিপ্লবের ইতিহাসে আজো ফিদেল ক্যাস্টো ও চে গুয়েভারা এর নাম সর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে- তাদের বিপ্লবের ইতিহাস পৃথিবী জুড়ে স্বাধীনতাকামী মুক্ত জনতার সুপাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হয় । ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখা এই বিপ্লবের ইতিহাসই আজ আমরা সৃজনশীল ব্লগ কালাক্ষর এ তুলে ধরবো। 

  1. কিউবার বিপ্লবের ইতিহাস নিয়ে রচিত কিউবান বিপ্লবের ইতিহাস (শেষ পর্ব) পরতে এখানে ক্লিক করুন  
  2. আফিম যুদ্ধের ইতিহাস
  3. উইঘুর দের বেদনাদায় ইতিহাস
  4. কুর্দি- রাজ্যহারা এক সংগ্রামী জাতির ইতিহাস 
  5. মায়া সভ্যতা: প্রাচীন মায়ান সাম্রাজ্য ও মায়া সভ্যতার ইতিহাস

স্পেনের নিকট থেকে বিংশ শতকের শুরুতে কিউবা স্বাধীনতা অর্জন করলেও কিউবা বিপ্লবের আগ পর্যন্ত কিউবাতে কার্যত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক ধরনের ছায়া ঔপনিবেশিক শাসন বজায় ছিল। এর পিছনে প্রধান কারণ ছিল কিউবার স্বাধীনতায় মার্কিন যুক্তরাস্টের হেল্প- মুলত মার্কিনিদের কারনেই কিউবা স্পেনের শাসন থেকে মুক্তি পায়, আমাদের মুক্তি যুদ্ধের সময় ভারত যেমন হেল্প করেছিল বিষয়টা তেমনি ছিল- আর সে কারনেই মার্কিনিরা কিউবান দের দন্ড মুর্ত কর্তা বনে যায়,

সে কারনেই কাস্ত্রোর পূর্বে যে সকল সরকার কিউবার চালকের আসনে বসেছে তারা প্রায় সকলেই ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘হাতের পুতুল’ । এর মধ্যে যদি কোন শাষক মার্কিনদের বিরুদ্ধে যেত তাহলে মার্কিনিরা তাকে ছলে বলে শাসন ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে দিত। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ১০ই মার্চ জেনারেল ফুলজেন্সিও বাতিস্তা কিউবার প্রেসিডেন্ট কার্লোস পিয়েরের সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে এবং বাস্তিস্তা সরকার সকল নির্বাচন বাতিল করে দেয়। বাতিস্তা ছিলেন মার্কিনদের একজন মনোনীত শাসক। মার্কিনিরা নিজেদের সার্থ হাচিল করতেই বাতিস্তা কে ক্ষমতায় বসায়। তাই বাতিস্তার সকল কর্মকান্ড মার্কিনিদের দ্বারা বৈধতা পায়।

মার্কিনিদের সমর্থনে ক্ষমতায় এসেই সরকারি কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ যাতে কেউ না করতে পারে এই জন্য দেশে হরতাল কিংবা অবরোধও এসময় নিষিদ্ধ করে বাতিস্তা সরকার। আর বাতিস্তা ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার বিনিময়ে মার্কিনরা কিউবাকে একটি বানিজ্যিক কুঠি হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। রেজাল্ট যা হবার তাই হয়- এ সময় কিউবার সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সব দিকেই অবনতি শুরু হয়। সে সময় কিউবার প্রধান অর্থনীতির উৎস চিনি শিল্প সম্পুর্নরূপে মার্কিন বুর্জোয়া এবং মাফিয়া শ্রেনীর লোক জনের হাতে চলে যায়। ফলে তারা এই শিল্পে ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে একদিকে যেমন কিউবার কৃষক/শ্রমিকদের বঞ্চিত করার সাথে সাথে কিউবার স্থানীয় বণিকদেরও বাজার থেকে বিতাড়িত করে। যার ফলে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই কিউবার অর্থনীতিতে ব্যাপক ভঙ্গুরতা দেখা দেয়। যার ফলে শুধু বাতিস্তা ই নয় পুরো কিউবাই এসময় আমেরিকান বুর্জোয়াদের জুয়া খেলার মাঠে পরিণত হয়।

বাতিস্তার শাসনের সময় কিউবার অর্থনিতি পুরো ভেঙ্গে পড়ে। দেশের পুরো সম্পদ মুস্টিমেয় কিছু মানুষের ভাগে চলে যায় ফলে সমাজে কেবল দুইটি শ্রেনী গড়ে ওঠে। একটি হল বুর্জুয়া সমাজ যাদের শাষক শ্রেনী ও একটি গরিব সমাজ বলে আখ্যায়িত করা হয়- আর এক সময় এই গরীব ও ধনী/বুর্জুয়া শ্রেণীর মাঝে আকাশসম পার্থক্য গড়ে ওঠে । মার্কিনীরা কিউবা থেকে কেবল অর্থ ই লুট করেনি- এ সময় তারা কিউবার মাটিকে নিজেদের আনন্দ-ফুর্তির স্বর্গ ভূমি হিসেবে ব্যাবহার করে।

তারা কিউবার সুন্দরী নারীদের কে দিয়ে দেহব্যবসা শুরু করে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে তখন শুধু কিউবার রাজধানী হাভানাতেই (হাভানার জনসংখ্যা তখন ছিল মাত্র ১০লাখ এর আশেপাশে) ২৭০টির বেশি যৌন পল্লী গড়ে উঠেছিল, যাতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতো প্রায় সাড়ে বারো হাজার মহিলা ও শিশু। এসবের পাশাপাশি কিউবাতে মাদকের আমদানির ব্যাপকতা খুব প্রকট আকারে ধারন করে। যার ধারাবাহিকতায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কিউবাতে ধনী দরিদ্রের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য দৃশ্যমান হয়।

সে সময় কিউবাতে সংবাদ মাধ্যম গুলো ছিল বুর্জুয়া শ্রেনীর গোলাম তাই কিউবার এমন অশৃঙ্খল অবস্থাকে বিশ্ববিবেকের কাছে তুলে ধরতেও ব্যর্থ হয়েছিলো তৎকালীন সংবাদ মাধ্যম৷কারন দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো বাতিস্তা সরকারের হাতের পুতুল হিসাবে থাকতে বাধ্য হত। দেশের কোথাও যাতে অভ্যুত্থান কিংবা জনবিপ্লব গঠতে না পেরে তার জন্য বাতিস্তা সরকার তৈরি করেছিলো গুপ্ত পুলিশ। একটি সমীক্ষায় জানা যায়, প্রায় ২০০০০ নিরীহ জনগণ খুন হয়েছিল এই বাতিস্তা সরকারের এই গুপ্ত পুলিশদের হাতে। চলবে 

  1.  –  কিউবান বিপ্লবের ইতিহাস (শেষ পর্ব) 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
©2021 All rights reserved © kalakkhor.com
Customized By BlogTheme
error: Content is protected !!

Discover more from কালাক্ষর

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading