1. sjranabd1@gmail.com : Rana : S Jewel
  2. solaimanjewel@hotmail.com : kalakkhor : kal akkhor
অতৃপ্ত আত্মা- বাংলা রোমান্টিক গল্প - কালাক্ষর
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন

অতৃপ্ত আত্মা- বাংলা রোমান্টিক গল্প

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২
হেলো ইফেক্ট
প্রভা। ছবি - ফেসবুক

আপনার বউ আমার সাথে কথা বলে,দেখা করে!আপনি জানেন? আমার সামনে বসা ভদ্রলোকটি তার হাতে থাকা জ্বলন্ত সিগারেটটা টেবিলে রাখা ট্রে তে ভর দিয়ে নিভিয়ে ফেললো। তার প্রশ্নের একটা জবাব দেয়া দরকার।তাই বললাম, -আপনি ঠিক আছেন তো।আমার বউ আপনার সাথে কোন দুঃখে দেখা করতে যাবে? -আমি পুরোপুরি ঠিক আছি।আপনি হয়তোবা জানেন না,আমি শায়না র বয়ফ্রেন্ড ছিলাম।বিয়ের আগে তো অনেক সময় দিয়েছি দুজন দুজনকে।কিন্তু ও যে বিয়ের পর ও আমার কাছে আসবে এটা জানতাম না। -তো লাস্ট কবে দেখা করেছেন? -এইতো গতকাল,শহরের উত্তর সাইডের কথা আবাসিক হোটেলে। কিন্তু একটা বিষয় কেমন যেন লাগলো, আপনি কি ওকে মারধোর করেন নাকি?সায়নাকে কেমন যেন লাগছে ক’দিন ধরে? -আমি আবারো বলছি আপনার মাথা ঠিক আছে তো? -আপনি অনেক মজার মানুষ দেখছি।আমি আপনার বউ কে নিয়ে কথা বলছি,আর আপনি এতো ইজিলি এড়িয়ে যাচ্ছেন! আর হ্যাঁ, বউ কে রাতে যদি সময় দিতেই না পারেন,বিয়ে করতে বলেছিলো কে? -মিস্টার শাহেদ,আপনার কথা মনোযোগ দিয়েই শুনছিলাম।কিন্তু আপনি সায়নার সাথে দেখা করলেন কিভাবে? -কেন,ও আমার বাড়ির দারোয়ানের মাধ্যমে খবর পাঠায়! -আমার বউ নন্দীনি আরো ৪ মাস আগে মারা গিয়েছে।আমি নিজ হাতে তাকে কবর দিয়েছি।আমার মনে হয় আপনার মাথা ঠিক নেই।প্রচন্ড গরম পড়ছে,এর জন্য হয়তোবা এলোমেলো কথা বলছেন! আমার কথা শুনে ভদ্রলোক শাহেদের কপাল ঘামতে লাগলো।পকেট থেকে রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে বললো, -আপনি আমার সাথে মজা করছেন তাইনা?

আসলে নিজের বউ যদি অন্য কারো সাথে পরকিয়া করে সেটা যেকোনো স্বামীই প্রথমে বিশ্বাস করে না।আপনিও তার ব্যতিক্রম না। -দেখুন শাহেদ,আমি আপনার সাথে মোটেই মজা করছি না।একটা ভয়ংকর রোড এক্সিডেন্টে সায়না মারা গিয়েছে।এই দেখুন তার প্রমাণ। সায়নাকে নিয়ে একটা নিউজ হয়েছিলো, সেটা মোবাইলে থেকে বের করে দেখালাম। ভদ্রলোক ভ্রু কুঁচকে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে।গলা শুকিয়ে গেলে একটা মানুষ যেমন করে, তিনিও তেমন করছেন।পাশ থেকে পানির গ্লাসটা তার দিকে এগিয়ে দিতেই গপাগপ পানি খেয়ে ফেললো। তারপর ব্যাঙ্গের সুরে আমাকে বললো, -আপনি আমাকে ভুলভাল শুনিয়ে অযথাই ভয় দেখাচ্ছেন।আমার সাথে আপনার বউ সায়নার একান্ত কিছু ছবি আছে।আপনি দেখতে পারেন, আমি আপনাকে দেখাচ্ছি। শাহেদ তার মোবাইল খুঁজে কিছু ছবি আমাকে দেখাতে গিয়ে মোবাইলের দিকে মুখ হা করে তাকিয়ে থাকলো।কারণ সেখানে শুধু তার ছবিই দেখা যাচ্ছে।অন্য কারো ছিটেফোঁটাও নাই ছবিগুলোর ভিতরে। তিনি একটা ব্যক্তিগত ভিডিও দেখাতে গেলেন কিন্তু আগের মতো সেখানেও ব্যর্থ। ভদ্রলোক ভয়ে কুঁকড়ে গেলো।চেয়ারটা সরিয়ে আমার দিকে এগিয়ে বসে বললো, -ভাই আমার সাথে এমন হচ্ছে কেন?মদ খাওয়া বেশি হয়ে গেছে মনে হয়।আজকে আসি,আমি আপনার সাথে কেন দেখা করলাম সেটা আগামীকাল বলবো।সাথে আপনার বউ কেও নিয়ে আসবো। চেয়ার থেকে উঠে ঢুলতে ঢুলতে হোটেলের রুম থেকে বের হয়ে গেলো শাহেদ।অবশ্য ইনিই প্রথম না, এ পর্যন্ত আরো দুজন এসেছে আমার কাছে।তারা সবাই দাবি করেছে আগে সায়নার সাথে তাদের সম্পর্ক ছিল।আগের দুজনই আমার কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করেছিলো।না হলে আমার বউ র ভিডিও ভাইরাল করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল।কিন্তু বরাবরের মতো ব্যর্থ হয়ে তারা চলে গিয়েছিল। হোটেল থেকে বের হয়ে দেখি বৃষ্টি হচ্ছে।আগের দুজন দেখা করতে আসার দিন ও তো বৃষ্টি হয়েছিল,তারপরের দিন সায়নার এক্সিডেন্ট করা স্থানে তাদের লাশ পাওয়া গিয়েছিল।তারমানে আজ কি শাহেদের প্রাণ সংশয়ে আছে? বাইকটা নিয়ে উল্টো ঘুরে এক্সিডেন্টের জায়গার পথে রওনা দিলাম। আশংকা যখন সত্য হয় তখন ভয়ের চেয়েও বড় কিছু থাকলে মস্তিষ্কে সুন্দরভাবে আঘাত হানে।যা ভেবেছিলাম তাই,কাছেই একটা ভয়াবহ কার এক্সিডেন্ট হয়েছে।আমি কাছে গিয়ে দেখি আমার ধারণা সত্য।শাহেদ যন্ত্রনায় ছটফট করছে।গাড়ির ড্রাইভার স্পট ডেড।বৃষ্টির কারণে রাস্তায় মানুষের পরিমান নিতান্তই নেই।আমি কোনো রকমে শাহেদকে পাকড়াও করে গাড়ি থেকে বের করলাম।তারপর অনেক কষ্টে একটা গাড়ি জোগার করে হাসপাতালের পথে রওনা দিলাম। শাহেদ তখনো কথা বলছে,আমার মুখের দিকে তাকিয়ে হাঁপিয়ে বলতে লাগলো,

আমি এতো কিছু কোনোদিন ভাবি নাই ভাইয়া।কেন সায়না রেগুলার রাতেই আমার সাথে দেখা করতো?কেনই বা কোনোদিন মোবাইলে কল করে নাই।আমি কিচ্ছু ভেবে দেখিনাই।আজকের এক্সিডেন্ট হওয়ার আগেও গাড়ির সামনে আমি সায়নাকে দেখেছি।আমি মরে যাবো মনে হয় ভাই,আমাকে বাঁচান। আমি বাঁচতে চাই। বাঁচার জন্য চরম আকুতিই হয়তোবা শাহেদকে আরো কিছু সময় বাঁচিয়ে রেখেছিলো।ততক্ষণে আমি সুবর্ণা হোটেলের কয় নম্বর রুমে সায়না দেখা করতো সেটা শুনে নিয়েছি!আশ্চর্য্য হয়নি শুনে,কারণ আগের দুজনও একই রুম নম্বর বলেছিল। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই শাহেদ পরপারে চলে গেলো।মৃত্যুর আগে এমনভাবে ছটফট করছিলো যেন কেউ তার গলাটিপে ধরেছে।পুলিশকে জানিয়ে শাহেদের লাশটা তাদের হেফাজতে রেখে চলে আসলাম। বাড়িতে আমার নতুন বিয়ে করা বউ রয়েছে।অনেক রাত হলো,সে একা। বাড়ির পথে রওনা দিতেই আজগুবি সব সমস্যার সম্মুখীন হলাম।বারবার আমার সামনে আমি সায়নাকে দেখতে লাগলাম। রক্তাক্ত মুখ,থ্যাতলানো মাথা, পেট থেকে বের হয়ে যাওয়া নাড়ি-ভুড়ি সে এক বীভৎস অবস্থা।এক্সিডেন্ট হয়েছিলো এক ভয়ংকর ভাবে।আমার সাথে সায়নার বিয়ের আগের অতীত নিয়ে ঝগড়া হচ্ছিলো।এক পর্যায়ে সায়না বের হয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শুরু করে,রাস্তা পার হওয়ার সময় একটা কাভার্ড ভ্যান তাকে পিষে দিয়ে চলে যায়। োখের সামনে সায়নার আর্তনাদ দেখেছিলাম পাষানের মতো।বাড়িতে এসে দেখি আবির এখনো জেগে।বাবা মায়ের ইচ্ছাতেই দ্বিতীয় বিয়ে করেছি।মেয়েটা সায়নার মতোই, অনেক কেয়ারিং। কিন্তু অনেক ভীতু।আমাকে ভেজা অবস্থায় দেখে অনেক রাগ করলো। আমি ওকে কিছু না বলে সুবর্ণা হোটেলের ব্যাপারটা নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করলাম।হোটেলের যেই রুমে সায়না সবার সাথে দেখা করে সেই রুম নাম্বার লিখে সার্চ দিতেই আমার ল্যাপটপ হ্যাং করা শুরু করে দিল।কোনোরকমে আর কাজ করলো না। আমাদের পারিবারিক কবরস্থানেই সায়নাকে দাফন করেছিলাম।নিজ হাতে রেখে এসেছিলাম তাকে।আজকে তার কথা মনে পড়াতে কবরস্থানটার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।বজ্রবৃষ্টি তখনো চলমান,সাথে বাতাসের ঝড়ো ঝাপটা।মুহুর্তের মধ্যে আমার সমস্ত শরীর ভিজিয়ে দিয়ে চলে গেলো।আর তখনি আমি সেদিন দ্বিতীয়বারের মতো সায়নাকে দেখতে পেলাম। িজের সাবেক বউ কে দেখে আমি ভয় পাবো সেটা কোনোদিন ভাবিনি।আমার থেকে মাত্র কয়েক হাত দূরে সায়না দাঁড়িয়ে।বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তার মাথা থেকে রক্তের ধারা চলমান।মনে হচ্ছে এইমাত্র তার কিছু হয়েছে।শূন্যে ভাসমান অবস্থায় সায়নার বীভৎস দেহখানি আমার চারিদিকে ঘুরতে থাকলো এবং বলতে থাকলো, -সুবর্ণা হোটেলের রুম নম্বর ৩০৩ নিয়ে মাথা ঘামিয়ো না।কিছুই পাবে না।

কথা বলার ভঙ্গিমা এতটাই ভয়ংকর ছিলো যে আমি একটা চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম।আবির আমার চিৎকার শুনে দৌঁড়ে আসলো।আমাকে অভয় দিয়ে সে তার রুমে নিয়ে গেলো। সেদিনের পর আমার মারাত্মক জ্বর চলে আসলো।যেটা সারলো আরো ৩ দিন পর।শাহেদকে আমি পুলিশের কাছে দিয়েছিলাম বিধায় একটা নোটিশ এসেছে আমার কাছে।আমি যেন লাশটা নিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করি।লাশটা মর্গে রাখা আছে।আমি শরীরের সাথে জোর খাটিয়ে আগে গেলাম সুবর্ণা হোটেলে।ম্যানেজারে সাথে কথা বললাম,তাকে রুম নম্বর ৩০৩ এর কথা বলতে আঁতকে উঠলো। তার মুখের এক্সপ্রেশন দেখে মনে হলো সে জীবনে প্রথম এইরকম কথা শুনলো।আমার প্রশ্নের জবাবে সে বললো, -স্যার আমাদের ৩০৩ বলে কোনো রুম নেই।আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। -আপনি ভালো করে ভেবে দেখেন।৩০৩ বলে রুম আছে। -আমি এখানে চাকরি করি ৩ বছর ধরে।কোনোদিন এই রুমের নাম শুনিনি। তাহলে আদৌও কি সায়নার অস্তিত্ব আছে।না এটা হ্যালুসিনেসন।কিন্তু সবার একসাথে হ্যালুসিনেসন হবে কেন? সুবর্ণা হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করলাম।যদিও তারা পারমিশন দিচ্ছিলো না।অনেক কষ্টে তাদের রাজি করিয়ে ফুটেজ দেখলাম। ভদ্রলোক শাহেদের কথামতে তিনি ২০ তারিখে এখানে এসেছিলেন।সেই দিনের রাতের ভিডিও চেক করলাম।প্রথমত দুইটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, ১।ভিডিও ফুটেজে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে শাহেদ সম্পূর্ণ একা একা হোটেলে প্রবেশ করেছে।কিন্তু তার পাশে মনে হচ্ছে কেউ একজন আছে,যার সাথে সে নিয়মিত কথা বলতে বলতে যাচ্ছিলো। ২। আটতলা পর্যন্ত উঠার পর শাহেদকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি!অর্থ্যাৎ শাহেদ আটতলার পর কোথায় গেছে কেউ জানেনা।আবার একটি নির্দিষ্ট সময় পর তাকে আটতলাতে দেখা গেছে। ম্যানেজারের দিকে তাকাতেই সে কাঁচুমাচু করতে থাকে। ভয়ে ভয়ে বলে,

স্যার ওনি কোথায় গেল? আমারো সেই একই প্রশ্ন!তিনি কোথায় গিয়েছিলেন সেদিন? শাহেদের গায়েব হয়ে যাওয়ার অংশটুকু মোবাইলে ভিডিও করে নিয়ে চলে আসলাম।ভবিষ্যতে কাজে দিতে পারে। একটা মেয়ে বেঁচে থাকতে আমাকে যেমন জ্বালিয়েছে মরে গিয়েও ঠিক তার চেয়ে বেশি জ্বালাচ্ছে।তিনটা মানুষ এসে পরপর অভিযোগ দিলো তাদের সাথে সায়না হোটেলে গিয়েছে, তারপর তারা আমার কাছে আসছে।এসব কিছু ভাবতে ভাবতে কখন যে হাসপাতালের সামনে চলে আসলাম বুঝে উঠতে পারিনি। পুলিশের কাছে ফোন দিয়ে তাদের আসতে বললাম।পুলিশ আসার পর আমার কাছে শাহেদের লাশ, তার মানিব্যাগ ও অন্যান্য জিনিস দিলেন।সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো শাহেদের মারা যাওয়ার ৪ দিন হয়ে গেলেও তাকে কেউ নিতে আসে নি।যেহেতু আমিই তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম, তাই আমাকেই তার লাশ নিতে হলো।শাহেদের মানিব্যাগ ঘেটে অনেক কষ্টে তার পরিচয় উদ্ধার করতে পারলাম।তার বাড়ি রাজবাড়ী। মুহুর্তের মধ্যে মাথায় প্রশ্ন আসলো,রাজবাড়ী রেখে এখানে কি?তাহলে কি সে সত্যি বলছে?তার ভোটার আইডি কার্ড থাকায় লাশটাকে নিয়ে শাহেদের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম একটা এম্বুলেন্স ভাড়া করে। আমার বাইকটা একটা স্ট্যান্ডে রেখে এম্বুলেন্সে করে আমি, আর গাড়ির ড্রাইভার শাহেদের লাশ নিয়ে রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।উদ্দেশ্য ছিলো শাহেদের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা।এছাড়া লোকটা শেষ আমার সাথে দেখা করেই মারা গিয়েছে।তাই তার লাশটার একটা শেষ ব্যবস্থা করা আমার দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। কিছুপথ যেতেই গাড়ির পিছনের সাইড থেকে একটা অদ্ভুত গোঙানির আওয়াজ আসতে থাকলো।ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করতেই সে বললো, এটা তেমন কিছু না। আপনি চুপ করে বসে থাকেন।কিন্তু আমি চুপ করে থাকতে পারলাম না।লুকিং গ্লাসে আমি স্পষ্ট সায়নার চেহারা দেখতে পেলাম।সেই রকমের ভয়ংকর চেহারা। হঠাৎ করে এম্বুলেন্সের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেল।গাড়ি থেকে দুজনে নেমেই হতবাক হয়ে যাই।গাড়ির পিছনের অংশ খোলা এবং লাশটা নেই।ড্রাইভার এবং আমি দুজনে দুজনের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।গাড়িতে থাকা টর্চ নিয়ে ভালো করে খুঁজতেই লাশটাকে পেলাম।যেখানে গাড়ি নষ্ট হয়েছে তার ৫০ মিটার মতো সামনে।আমি ইচ্ছা করেই সামনের দিকে লাইট মারি, তখনই দেখি লাশটা গাড়ির সামনে।অথচ লাশ পড়ে গেলে পিছনের দিকে পড়ে থাকার কথা। এম্বুলেন্সের ইঞ্জিনের সমস্যা ড্রাইভার নিজেই ঠিক করলো।ঠিক করার পর আমি এবং ড্রাইভার শাহেদের লাশটাকে নিয়ে আসতে গেলাম।লাশটা এতভারী যা বলার মত না।আবার যথারীতি আগের মতো করে যাত্রা শুরু করলাম। এবার পিছন থেকে আবারো একটা আওয়াজ আসতে থাকলো।

পিছনে তাকিয়ে দেখি শাহেদের লাশটা সোজা হয়ে বসে আছে।আয়তুল কুরসী পড়ে ফুঁ দিয়ে কোনোমতে পরিবেশটাকে শান্ত করলাম।বুঝতে পারলাম এটা হয়তোবা সায়নার অতৃপ্ত আত্মার কাজ। একটা সময় আমরা শাহেদের বাড়ির ঠিকানায় চলে গেলাম।তাদের বাড়ির কেউ জানেই না যে শাহেদ মারা গিয়েছে।তারা ভেবেছে শাহেদ কোথাও কাজে গিয়েছে ।মুহূর্তের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে গেল। লাশটাকে দ্রুত দাফনের ব্যবস্থা করে শাহেদের বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম তারা সায়না নামে কাউকে চেনে কিনা! সায়নার কথা বলতেই শাহেদের বাবা বললো, -শাহেদ সায়নাকে খুব ভালোবাসতো।কিন্তু মেয়েটা আমার ছেলেকে বিয়ে করেনাই।মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ফাঁকি দিয়ে চলে গিয়েছে। আমি আর বললাম না যে সায়নার সাথে আমার বিয়ে হয়েছিল।সেদিন ওই বাড়ি থেকে চলে আসলাম। ৯ মাস আগে যখন আমার সাথে সায়নার বিয়ে হয় তখন মেয়েটা খুব হাসি মুখেই বিয়েটা করে।কিন্তু বিয়ের পর থেকে আমি লক্ষ করি সায়না মোবাইলে গল্প করে।এটা তার একধরনের আসক্তি ছিল।সারাদিন সে কাজকর্ম রেখে গল্প করতো।কিন্তু আমার সামনে এমন ভাব দেখাতো যে আমাকে ছাড়া ও কাউকে ভালোবাসেনা। একদিন হঠাৎ এই মোবাইলে কথা বলা নিয়ে তার সাথে আমার ঝগড়া হয়।তবুও সে স্বীকার করে না সে কার সাথে কথা বলে। সায়নার চাচাতো বোনের থেকে জানতে পারি,একাধিক ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল সায়নার।বিয়ের আগে যেমন কথা বলতো,বিয়ের পরেও অভ্যাসটা ছাড়তে পারে নি। এভাবেই একদিন আমার সাথে ঝগড়া হয় এবং সে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করে মারা যায়। ….আবির ইদানীং একা থাকতে ভয় পায়।আমি যেদিন বাড়ি থাকিনা সেদিন সে নুপুরের আওয়াজ শুনতে পায়।ডাইনিং রুম থেকে শুরু করে সমস্ত ঘরে আওয়াজটা হতে থাকে। আমাকে ব্যবসার কাজে প্রায়ই বাইরে থাকতে হয়।একদি সে ফোন দিয়ে বলে তার পাশে সে অন্য আরেকজনের অস্তিত্ব বুঝতে পারছে।অর্থ্যাৎ বিছানায় আবির বাদেও অন্য একজন শুয়ে।কিন্তু বাড়িতে কারো থাকার কথা না। আবিরকে সাহস দেয়া ছাড়া কিছু করার ছিল না। কথা হোটেলে আমি আবারো গেলাম।এবার একটা পুলিশকে সাথে নিয়ে,যাতে হোটেল কর্তৃপক্ষ ঝামেলা করতে না পারে।৩০৩ নম্বর রুমের রহস্য আমাকে বের করতেই হবে। হোটেলের ম্যানেজার পুলিশকে দেখে খুব ভয় পেয়ে গেলেন।আমাকে বললেন, -আপনি পুলিশ এনেছেন কেন?আপনি একাই আসতেন! -আপনারা সেদিন ঝামেলা করেছেন আগে।তাই এই ব্যবস্থা।যেহেতু এটা একটা মার্ডার কেসের কাজ।তাই এটুকু সাহায্য নেয়া যেতেই পারে। সেদিন নতুন কিছুই পেলাম না।পুলিশকে ভিডিও দেখিয়ে চলে আসলাম। “রুম নম্বর ৩০৩ এর রহস্য উদঘাটনের জন্য আমার মনে হয় হোটেলের মালিকের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।”-পুলিশ সাইদুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলার পর তিনিও সায় দিলেন। এরমাঝে ঘটে গেলো একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।আবির বাড়িতে যখন একা ছিল তখন একটা ছায়া এসে তাকে ধাক্কা মারে। আর এতে তার মাথা ফেটে যায়।একা একা বাড়িতে থাকায় আবিরকে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যায় নি।আমি বাড়িতে গিয়ে দেখি সে মেঝেতে শুয়ে আছে। সাথে সাথে তাকে একটা ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে আসি। মনের ভেতরে সায়নার ভয়, আর রুম নম্বর ৩০৩ এর রহস্য আমাকে ঘেরাও করে ফেলতে লাগলো।

সেদিন সায়নার কবরের কাছে আরেকবার গেলাম।টাইলস দিয়ে বাঁধানো কবরটা চাঁদের আলোতে ঝিকমিক করছে। কবর থেকে কিছুদূরে থাকতেই আমার চারপাশ দিয়ে একটা বাতাস বয়ে গেলো।সাথে বাতাসের ফিসফিসিয়ে আওয়াজে আমাকে ডাকতে লাগলো, -নাবিল। সাথে আকাশ বাতাস আলোড়িত করা অট্টহাসি।গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেলো এই হাসিতে।হঠাৎ করে আমার মুখের সামনে একটা মুখ,হ্যাঁ এটা আমার সায়নার মুখ।বীভৎস ভঙ্গিতে বলতে লাগলো, -নাবিল,কোনো লাভ হবে না।কাউকে বাঁচাতে পারবে না।রুম নং ৩০৩ তুমি খুঁজে পাবে না।বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমার বউ কে আমি শেষ করে দিবো।তুমি পিছু হটে যাও নাবিল।তোমার ভালো চাইলে তুমি চুপ হয়ে যাও। -না আমি পারবো না। একথা বলার সাথে সাথে কে যেন আমার পা ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে টেনে নিয়ে যেতে থাকলো।হাসির শব্দ শুনে বুঝলাম এটা সায়নার হাসি। -সায়না আমাকে ছেড়ে দাও,ছেড়ে দাও। -তোমাকে কিছুটা শাস্তি দিতে হবে।তুমি দমে যাওয়ার পাত্র নও। -কিন্তু আমি কি করেছি?(আহত গলায় বললাম) -আমার মৃত্যুর জন্য তুমিও দায়ী নাবিল।আমি কাউকে ছাড়বো না।তোমাদের ছেড়ে দিলে যে আমার অতৃপ্ত আত্মা শান্তি পাবে না। এ কথা বলে আমাকে ৪ হাত মত উঁচুতে তুলে আছাড় দিয়ে ফেলে দিল।কোমরে প্রচন্ড ব্যথা অনুভুত হলো।সেই ব্যথা নিয়ে আমি কোঁকড়াতে কোঁকড়াতে ঘরে এলাম। রুমের অবস্থা আরো খারাপ।আসবাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।কিন্তু আবির নেই।আবিরের নাম ধরে ডাক দিতেই আমার চোখ গেল তার উপর।ঘরের একটা কোনে গুটিশুটি মেরে বসে আছে।আমি কাছে যেতেই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, -আমি এই বাড়িতে থাকতে চাইনা নাবিল।আমাকে অন্য কোথাও নিয়ে চলো।এ বাড়িতে অন্য কিছু আছে। একথা বলার সময় হঠাৎ রুমের বড় লাইট টা ব্লাস্ট হয়ে গেলো আমাকে জড়িয়ে ধরে আবির ভয়ে কান্না করতে শুরু করলো।অবশ্য এরকম পরিবেশে কান্না করাটাই স্বাভাবিক।বিকট শব্দের পর রুম জুড়ে পিনপিন নীরবতা।মনে হচ্ছে পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক।

আবিরকে সাথে করে নিয়ে বেডরুমের দিকে হাঁটা ধরলাম।লাইটের কাঁচের টুকরাতে পা কেটে রক্ত ঝরতে লাগলো।অন্য সময় এটা হলে আমি ওখানেই বসে পড়তাম।কিন্তু আবিরকে অভয় ও স্বাভাবিক রাখার জন্য কোনোরকম শব্দ না করেই হাঁটতে থাকলাম। অন্ধকারে আমরা দুজন হাঁটছি আস্তে আস্তে পা ফেলে।হঠাৎ দুজনেই একসাথে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলাম।মনে হলো একটা মানুষ মেঝেতে শুয়ে আছে আর আমরা তার সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলাম।ভয়ে কলিজা শুকিয়ে আসলো এই প্রথম।আবির আমাকে বললো, -নাবিল,ওখানে একটা মানুষ।তাড়াতাড়ি উঠো। -ও কিছুনা,কিছু একটাতে হোঁচট খেয়েছি হয়তোবা।সমস্যা নেই,ভয় পেয় না। আমি আছি তো।আমি থাকতে তোমার কিছু হবে না। দুজনে হেঁটে শেষ পর্যন্ত বেডরুমে গেলাম।ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত অট্টহাসি এবং নুপুরের আওয়াজ শোনা লাগলো।নুপুরের আওয়াজ আর অট্টহাসি দুটোই আমার পরিচিত।সায়না অন্ধকারে নুপুর পরে হেঁটে বেড়াতে ভালবাসতো। পরেরদিন সকালে উঠে দেখি আবিরের গায়ে প্রচুর জ্বর।মাথায় পানি ঢেলে একটু স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে সক্ষম হলাম। আবিরকে সাথে করে নিয়েই বের হলাম।ওকে একা একা এ বাড়িতে রাখা আর সুবিধার হবে না।তারচেয়ে বরং আমার বন্ধু রানার বাসায় তার বউ য়ের কাছে রেখে যাই। আবিরকে রানার বাড়িতে রেখে আমি থানার পথে পা বাড়ালাম।যা যা হয়েছে তা নিজের মতো করে ভাবতে লাগলাম।সায়না কেন এমনটা করছে সবার সাথে।ও কি চায় না যে আমি আবিরের সাথে ঘর সংসার করি? কিন্তু একটা মৃত মানুষ কেন এমনটা করবে?ও আল্লাহ,আমাকে সাহায্য করো। এসব আজগুবি চিন্তাভাবনা করতে করতে কখন যে থানার কাছে চলে এসেছি বুঝতেই পারিনি। তদন্ত কর্মকর্তা সাইদুজ্জামানকে সাথে নিয়ে আবারো সুবর্ণা হোটেলে চলে যাই। রেসিপশনে ম্যানেজার বসে নেই।একটা ১৮ -১৯ বছরের যুবক ম্যানেজারের পাশের চেয়ারটাতে বসে আছে।মুচকি হাসি দিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, -ম্যানেজার কই আছে জানো ভাই? -ওনি তো উপরে গেছেন! -উপরে বলতে? -কেন? -একটা মেয়ে এসেছে, তাকে রুম দেখাতে নিয়ে গেছে! সাধারণত হোটেলের ম্যানেজাররা রুম দেখাতে নিজে যায় না।কিন্তু এক্ষেত্রে যাওয়ার কারণ কি?কত নম্বর রুমে গেছে সেটা শুনে সেই বরাবর দুজনে হাঁটা দিলাম।একেবারে কর্ণারের দিকে রুমটা।আমি এবং সাইদ স্যার দুজনের চোখ কান খোলা রেখে সামনে এগোতে থাকলাম। ছেলেটার বলা রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।রুমটা ভেতর থেকে লক করা। সাঈদ স্যার দুবার দরজায় নক করলেন!ভেতর থেকে একটা সুদর্শন তরুনী দরজা খুললেন!এতটাই সুন্দরী তিনি যার থেকে চোখ ফেরানো মুশকিল।সেটাই হলো ওসি সাঈদের ক্ষেত্রে।মুখ হা করে তাকিয়ে থাকলেন।আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলাম, হোটেলের ম্যানেজার কি আছে? -কেন? -দরকার না হলে বলতাম? থাকলে বাইরে আসতে বলুন।বলেন পুলিশ এসেছে তার সাথে দেখা করতে। পুলিশের কথা শুনে ভেতর থেকে ম্যানেজার একাই বের হয়ে আসলেন।তার গা ঘামছে, বোঝা যাচ্ছে তিনি হয়তো খুব টেনশন করছেন। ম্যানেজারকে সাথে নিয়ে একটা রুমে প্রবেশ করলাম।মেয়েটির সাথে তার ওখানে কি জিজ্ঞাসা করতেই সে আমতা আমতা করতে থাকলো।

দু তিনবার ধমক দেয়ার পরে তিনি যা বললেন তাতে বোঝা গেলো, -মেয়েটা একটা পতিতা।সাময়িক বিনোদনের জন্য এখানে আসা। “তারমানে কি এই হোটেলে এসব কিছু আগে থেকেই হয়?”-ম্যানেজারে উদ্দ্যেশ্যে প্রশ্নটা করলে তিনি মাথা নীচু করে থাকেন।ভাবে বোঝা গেলো ঘটনা যা আন্দাজ করেছি তা সত্য! রুম নম্বর ৩০৩ এর ব্যাপারে আবারো ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসা করলাম।আগের মত করেই এড়িয়ে গেলেন। ওসি সাঈদকে বললাম, .-এ ব্যাটা এভাবে কিছু বলবেনা।স্যার দেখেন তো ঘরে নিয়ে গিয়ে রিমান্ডে নেয়া যায় কিনা!, রিমান্ডের কথা শুনে বেচারা ভয়ে গুটিয়ে গেল।দৌঁড়ে এসে পা ধরে কেঁদে মাফ চাইতে লাগলো।আর বললো, হোটেলের মালিক সব জানে!৩০৩ নম্বর রুমের ব্যাপারে কাউকে কিছু বলা নিষেধ। নীচ থেকে ম্যানেজারকে উঠিয়ে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললাম, -ব্যাটা এবার বল। ম্যানেজারের বর্ণনাঃ উত্তর সাইডে ২৪০ নম্বর রুমের পাশে মালিক নতুন নকশা করে একটা রুম তৈরি করে।রুমটার নম্বর দেয়া হয় ৩০৩। সমস্ত ধরনের অপকর্ম ওই রুমটাতে হতো।কেউ ডেটিংয়ে আসলে ৩০৩ নম্বর রুমের কথা বলে তাকে ওখানে পাঠিয়ে দেয়া হতো।এসি রুম,ফুল মেইনটেইন করা সিকিউরিটি, আর বাইরের কেউ জানেনা বিধায় অনেকে রুমটা ভাড়া করতো।কিন্তু কয়েকমাস পর রুম থেকে অদ্ভুত কিছু আওয়াজ আসতে থাকে।ভয়ে কেউ ওই রুমে তখন আর যেতে চাইতো না।ভয়ে একটা মেয়ে ওখানে হার্ট এটাক করে মারা যায়।সেই থেকে ৩০৩ নম্বর রুম বন্ধ করে দেয়া হয়।আর মালিক আমাকে বলে দেয় আমি যেন মরে গেলেও কারো কাছে এই কথা না বলি যে রুম নম্বর ৩০৩ বলে একটা রুম এই হোটেলে ছিল। বেচারা ম্যানেজারকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসলাম।এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করতে করতে রাত ১১ টা বেজে গেল। খোলা আকাশের নীচে পিচঢালা পথে একা একা হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির পথে রওনা দিলাম। পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়াই সায়নার অতীত আমি ভালো করে না জেনেই তাকে ঘরে তুলেছিলাম।তবে কি সায়নার কোনো ভয়াবহ অতীত আছে।যে অতীতের তাড়নায় পরে সে মারা যাওয়ার পরেও এখনো অতৃপ্ত অবস্থায় আছে?আমাকে সায়নার বাড়িতে গিয়ে সমস্ত কিছু শুনতে হবে। বাড়ি থেকে তখনো হাফ কিলোমিটার দূরে।বৃষ্টির ঝাপটা বারবার মুখে এসে লাগছে।মুখের উপরে হাত দিয়ে পানি সরানোর বৃথা চেষ্টা করছি।তখনই পিছন থেকে নুপুরের আওয়াজ শুনতে পেলাম। বুঝতে পারলাম সায়নার অস্তিত্ব আমার পিছনে।উলটো ঘুরে দেখি যা কল্পনা করেছিলাম তাই।আমার থেকে হাত দশেক দূরে দাঁড়িয়ে আছে।মুখটা স্পষ্ট না,কিন্তু একটা অবয়ব যে দাঁড়িয়ে আছে এটা স্পষ্ট। -কে সায়না? -আজকাল আগেই বুঝে যাচ্ছ? -নুপুরের আওয়াজটা পরিচিত তাই! -রুম নম্বর ৩০৩ এর রহস্য তুমি বের করে ফেললে।এবার কি করবে? -এতগুলো মানুষকে কেন তুমি হত্যা করছো সেটাও বের করে ফেলবো।

-আমার কথা তোমাকে যে বলবে আমি তাকেই মেরে ফেলবো।এমনকি তোমার এবং আবিরের ক্ষতি করতেও দ্বিধান্বিত হব না। -তুমি আমাদের কিছুই করতে পারবে না। এই কথা বলার সেকেন্ডের মাঝে সায়নার অবয়বটা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে সামনের দিকে চলে গেল।তার গতিপথ সোজা আমার বাড়ির দিকে।তাহলে কি আবিরের কিছু করবে?না আবির তো রানার বাসায়। একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ধীর পায়ে সামনের দিকে এগোলাম।বাড়িতে না গিয়ে সোজা রানার বাসায় গেলাম। ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি,বাইরে থেকে দেখলে বুঝায় যায়।পদে পদে নকশা করা।বাড়ির গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখি রানার বউ সবকিছু ঠিক করছে।মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ আগে কেউ রুমটার উপরে তান্ডব চালাইছে। আমাকে দেখে রানা এগিয়ে এসে বললো, -দোস্ত ভাবির কি হয়েছিলো জানিনা!সমস্ত রুম তছনছ করে একটু আগে হনহন করে বের হয়ে গেছে। আমি আর একটুও রানার বাসায় দাঁড়ালাম না।দৌঁড়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। তখনো বৃষ্টি চলমান।বাড়ির মেইন দরজা ভেতর থেকে লক করা।অনেক চেষ্টা করেও আমি প্রধান দরজা খুলতে পারলাম না।অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পর দেখি রানা আসছে। তার সাহায্য নিয়ে দুজন মিলে দরজাটা ভাঙলাম।ভেতরে অন্ধকার,রুম জুড়ে ভ্যাপসা রক্তের গন্ধ।লাইট জ্বালানোর অনেক চেষ্টা করলাম।কিন্তু লাইটের জায়গা থেকে দুবার ফায়ার হওয়া ছাড়া আর আলো জ্বললো না।প্যারানরমাল একটা অস্তিত্ব রুমে বিদ্যমান। এত ঠান্ডার মাঝেও রুমটা অনেক গরম।আমি মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে সামনে এগোতে থাকলাম।সেম আগের অবস্থা।রুম আর রুম নাই,ভাগারে পরিণত হয়েছে।মূহুর্তে সায়নার কথা মনে পড়লো, আমার সাথে ঝগড়া বাধলে কাপড় চোপড়ের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যেত। আরেকটু সামনে এগিয়ে আমি যা দেখলাম,তাতে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলাম না।রানা এসে দৌঁড়ে আমাকে ধরলো, আবিরকে দেখে চোখ কপালে উঠে গেল।ঘরের এমন একটা জায়গায় বসে আছে, যেখানে কোনো মানুষ উঠতে পারবে না।

ছাদের কাছাকাছি একটা জায়গাতে উলংগ হয়ে বসে আছে। রানা সেটা দেখে আমাকে নিয়ে বাইরে চলে গেল।কান্না করছিলাম,মনে হচ্ছিলো আমি আবিরকেও হারিয়ে ফেলবো। রানা নিজেই গিয়ে পাশের বাড়ি থেকে একটা মই নিয়ে আসলো।মই দিয়ে আমাকে রুমের ভেতর ঢুকিয়ে দিল।আমি মইটা নিয়ে রুমে ঢুকলাম।ছাদের প্রায় কাছে এমনভাবে ঝুলে আছে তা বলার মত না।অনেক কষ্টে আবিরকে ওই জায়গা থেকে নামালাম। নীচে নামিয়ে তাকে কাপড় পড়িয়ে একটু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম।কিন্তু সে আবোলতাবোল বলতে লাগলো।কিছু বিড়বিড় করেও বলছিল।কিছুটা স্পষ্ট এমন শোনা গেল, -আমাকে মেরো না।আমি কিছু করিনি। বুঝলাম খারাপ কিছু হয়েছে তার সাথে।মেয়েটা এই কারণে দিনদিন রোগা হয়ে যাচ্ছে।বিয়ের পর থেকে তাকে ভালো করে ভালোবাসাও হলো না।কষ্টই পেয়ে গেলো মেয়েটা।এখন আবার আরেক আতঙ্ক। সে রাতে তার পাশে বসে থেকেই রাত পার করে দিলাম। দুইদিন পর গেলাম সায়নার বাড়িতে।একসময় এ বাড়িটাতে প্রায়ই আসা হতো।আলিশান বাড়ি,বিশাল গেট।আমি ভেতরে ঢুকে দেখি সায়নার মা বাবা,আর ছোট বোন বসে আছে। আমাকে দেখে অনেকটাই অবাক হয়ে গেলেন তারা। তারা হয়তোবা কল্পনাও করেন নি, আমি তাদের বাড়িতে আসবো। সবাইকে সালাম দিয়ে একটু আলোচনা করে সায়নার মা কে বললাম, -আন্টি, আপনার মেয়ের জন্য আমি ঠিক থাকতে পারছি না।মরে গিয়েও আমাকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। কথাটা বলা মনে হয় একটু কঠিনই হয়ে গেল।সায়নার মা আমার কথা শুনে কান্না করতে লাগলো।আর বলতে লাগলো, -মরার আগেও মনে হয় তোমাকে শান্তিতে থাকতে দেয় নি?তাইনা বাবা! -আন্টি আপনি ভালো করেই জানেন সায়না কি করেছে।অযথা কথা প্যাঁচান কেন? আপনি কি জানেন?আমি কতটা খারাপ পরিস্থিতিতে রয়েছি।আমার জীবন এখন হুমকির মুখে রয়েছে।আমাকে প্রতিটা পদে পদে আপনার মেয়ের অতৃপ্ত আত্মা আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আমার কথা শুনে তাদের খুব একটা বিচলিত হতে দেখা গেলো না।মনে হচ্ছে তারা সবকিছু জানে এবং এই বিষয়টাই আমাকে তাদের প্রতি সন্দেহ বাড়িয়ে দিল।আমি সায়নার ছোট বোন তায়েবাকে ওখান থেকে ডেকে উঠিয়ে নিয়ে গেলাম।সোজা ছাদে চলে গেলাম। সায়নার বাবা ভদ্রলোক বেশ শৌখিন।ছাদে মস্তবড় এক বাগান।বাগানের একপাশে একটা দোলনা।তায়েবাকে দোলনাতে বসতে বললাম।সে অনেকটা বাধ্য মেয়ের মতই বসে পড়লো। -তায়েবা,তুমি কি কিছু জানো?মানে তোমার আপার কি আগে কোথাও রিলেশন ছিলো? আমার প্রশ্ন শুনে তায়েবা কান্না করতে শুরু করলো।কান্না করার মানে হলো সে জানে সবকিছু। কান্না করে একটু হাল্কা হওয়ার পর সে মাথা ঝাঁকালো।মানে সবকিছু জানে। -বলো আমাকে! -আপনার সাথে আপুর বিয়ে হওয়ার আগে আপু অনেকগুলো রিলেশনে ছিল।আমি বারণ করলেও সে শুনতো না।আপু একসাথে ৪ টা ছেলের সাথে প্রেম করতো।আমি যদি বলতাম আপু এগুলো ঠিক না,তখন সে আমাকে ধমক দিয়ে বলতো।

“তোর কি? আমি দশটা ছেলের সাথে প্রেম করলে তোর ক্ষতি কি?তুই শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবি!আর ছোট, ছোটোর মত থাকবি।” আমি কিছুই বলতাম না তখন।জানতাম মরা গাছের গোড়ায় পানি ঢেলে লাভ নাই। -তোমার আপুর সেই প্রেমিকগুলোর নাম জানো? -হুম, কান্না জড়িত কণ্ঠে সবার নাম বলতে লাগলো।শাহেদ,সিয়াম,শাকিল,আর মোজাম্মেল। -তুমি কি জানো মোজাম্মেল বাদে সবাই মারা গিয়েছে? আমার কথা শুনে তায়েবা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বললো, -মা মা মানে? -হ্যাঁ, যা শুনেছো সেটাই ঠিক।আর এই সবগুলো হত্যার পিছনে তোমার বোনের অতৃপ্ত আত্মা দায়ী। কিন্তু কেন তোমার বোন এদেরকে হত্যা করলো? -আ আ আমি জানিনা,আমি আর কিছু বলতে পারবো না! -তুমি ভয় পাচ্ছো কেন তায়েবা?আমি তোমার বড়ভাইয়ের মতো। আমাকে সব বলো।তুমি কি কিছু জানো?লুকাচ্ছো কেন? আর তুমি কি সুবর্ণা হোটেল চিন? -হুম,আপু সবার সাথে ওই হোটেলেই দেখা করতো।বলতে খারাপ লাগে তবুও বলি,আপু ৪ জনের সাথেই রুমডেট করেছে।ওই হোটেলের একটা রুমে। -হোলি শিট!,আমাকে আগে বলোনি কেন এসব? -সম্ভব ছিলো না! -তুমি কি তোমার আপুর সাথে ওই হোটেলে গিয়েছো? -হ্যাঁ, দুইবার।আমাকে বাইরে বসিয়ে ও ভিতরে যেত। -কত নম্বর রুম? তুমি জানো কিছু? -আমি সঠিকভাবে জানিনা।তবে একটা রুমই হবে। -তোমাকে অনেক ধন্যবাদ তায়েবা।অনেক না জানা কথা আজ তোমার থেকে জানতে পারলাম।আমি আরো খুশি হতাম যদি তুমি আরো আগে আমাকে এই বিষয়ে বলতে! তায়েবা আমার কথা শুনে শুধু নীরবে কান্না করতে লাগলো।ওর কান্নাকে উপেক্ষা করে আমি চলে আসছিলাম।ঠিক সেই সময় সে বললো, -ভাইয়া আরো একটা কথা। পিছন ফিরে দেখি সে কথাটা বলার জন্য অপেক্ষা করছে।আমি বললাম, -কি কথা বলো? -আপু যেদিন মারা যায়,সেদিন আমাকে ফোন দিয়েছিল।আমাকে কয়েকটা কথা বলতে বলতেই সে এক্সিডেন্ট করে! -কি কি কি কথা! মুখ দিয়ে স্বাভাবিকভাবে কথা বের হচ্ছিলো না।প্রচন্ড ঘামছিলাম। -আপু ভালো হয়ে যেতে চেয়েছিল।আমার কাছে ফোন দিয়ে বলতো, আমি আগে অনেক পাপ করেছি।এখন ভালো হয়ে সেগুলোর প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই।কিন্তু আপুর বয়ফ্রেন্ডগুলো আপুকে অনেক জ্বালাতো।আপু তাদের কাছে ধরা খেয়ে গিয়েছিল। তাই সারাদিন আপু তাদের বোঝাতো,যে আপুর বিয়ে হয়ে গেছে।এখন আর আগের অবস্থা নেই।কিন্তু তারা কেউই বুঝতো না। আপু আপনার সাথে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পথে আমাকে ফোন দিয়ে বলে, ৪টা ছেলের জন্য আমার বিবাহিত জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে।আমি ওদের শেষ করে তোর দুলাভাইয়ের বাড়ি যাবো।আমি বাড়িতে আসছি।তুই রেডি থাক, তোকে দরকার আছে। কিন্তু আফসোস ভাইয়া,আমার সাথে কথা বলতে বলতেই আপু এক্সিডেন্ট করে।

তায়েবা কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে কান্না করতে থাকলো।আমার কানে তার কান্নার চেয়ে সায়নার অব্যক্ত কথাগুলোই বেশি বাজতে থাকলো। তাহলে কি মনের জমানো রাগ থেকেই সায়না এভাবে প্রতিশোধ নিচ্ছে? হয়তোবা তাই। সায়নাদের বাড়ি থেকে চলে আসলাম।আমি শুধু অপেক্ষায় থাকলাম,কবে মোজাম্মেল আমার সাথে দেখা করে।কারণ ওকে আমার বাঁচাতে হবে।একদিন না একদিন সে আসবেই।আর সে অতি শীঘ্রই আসবে। আবির ইদানীং ভয়ে কান্না করে।কিছুই খেতে চায় না,একা একা রুমে থাকে সারাদিন।লাইট নিভিয়ে, দরজা জানালা আটকিয়ে।আবিরের দেখাশোনা করার জন্য একটা মহিলাকে রেখেছিলাম।মহিলা ঘরের ভেতর ছায়া চলাচল করা দেখে ভয়ে চলে গেছে।এদিকটাতে আর আসেই না। সেদিন রাতে একটা ভয়ানক দুঃস্বপ্ন দেখলাম।সায়না আমাকে বলছে, আমি যদি মোজাম্মেলকে বাঁচাতে চাই, তাহলে আবিরকে হারাতে হবে! আর যদি মোজাম্মেলকে না বাঁচাই তাহলে আমি আবিরকে ভালোভাবে পাবো। নিতান্তই দুঃস্বপ্ন ভেবে এটাকে উড়িয়ে দিলাম না।সাধারণত আমার বামপাশে আবির শুয়ে থাকে।কিন্তু গভীর রাতে মুখের উপরে গরম নিঃশ্বাসের অনুভূতিতে ঘুম ভেঙে গেলো।চোখ খুলে দেখি আমার মুখের উপরে এক জোড়া লাল টকটকে চোখ,আগুনের গোলার মত জ্বলজ্বল করছে।প্রথমে আবির ভেবে তাকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে গেলাম।কিন্তু এ কি,আমার হাত অবয়বটার ভেতর দিয়ে অনায়াসে ঘুরে বেড়াচ্ছে।চোখ বন্ধ করে আয়তুল কুরসী পড়ে ফুঁ দিয়ে তাকিয়ে দেখি কিছুই নেই।সাথে আমার পাশে আবির ও নেই।তাড়াতাড়ি করে উঠে লাইট জ্বালিয়ে দেখি আবির রুমের একটা কোনে জড়সড় হয়ে বসে আছে।আবিরকে অভয় দিয়ে আবারো বিছানায় এনে শুইয়ে দিলাম। *সেদিন বাংলাদেশের খেলা চলছিলো পাকিস্তানের সাথে।দুই প্যাকেট চিপস নিয়ে আবিরকে সাথে করে খেলা দেখছি।তখনই আমার ফোনে একটা ফোন আসে।আমি সালাম দিয়ে ফোনটা ধরতেই ওপাশ থেকে একটা একটা অপরিচিত কণ্ঠস্বর বলে, -আপনার বউ র সাথে কাটানো কিছু ঘনিষ্ঠ মূহুর্তের সাক্ষী আমি।যদি সম্মান বাঁচাতে চান, আমার সাথে দেখা করুন।আমি আজ সন্ধ্যায় হোটেল অপর্নায় আসবো।সাথে ৪ লাখ টাকা আনবেন। বুঝতে বাকি রইলো না,এইটা মোজাম্মেল।বেচারার প্রাণ সংশয়ে রয়েছে এইটা যদি সে জানতো তাহলে দ্বিতীয়বার টাকার কথা মুখে আনতো না।আমাদের ছেড়ে পালাতো। .মুখোমুখি বসে আছি আমি এবং মোজাম্মেল।আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বললো, -টাকা সঙ্গে এনেছেন তো? -আপনার জীবন সংশয়ে রয়েছে, এটা আপনি জানেন?

-কেন আপনি কি পুলিশকে বলেছেন?দেখেন পুলিশকে বলে লাভ নেই।এই ফটো আর ভিডিও অনেক জায়গায় কপি করা।আমার বন্ধুকে আমি সব বলে এসেছি।আমার কিছু হলে সে সব ভাইরাল করে দিবে। ভদ্রলোকের কথা শুনে মুচকি হেসে বললাম, -একবার গ্যালারি অন করে দেখেন তো সায়না আপনার পাশে আছে কিনা? -কি যে বলেন,মোজাম্মেল প্রমাণ ছাড়া কথা বলেনা।এই যে দেখুন, কথাটা বলেই ভদ্রলোক মোজাম্মেল আমাকে সায়নার পিকচার দেখাতে গেলো।কিন্তু তার চক্ষু ছানাবড়া হয়ে গেলো।সাথে বাইরে শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি। আশংকা সত্যি হবে সেইটা ভেবে আমিও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে গেলাম।মোজাম্মেলকে বললাম, -আপনি হয়তো প্রাণে বাঁচতে পারবেন না।সায়না আজকেই আপনাকে মেরে ফেলবে।যদি বাঁচতে চান, এখানেই থেকে যান।বৃষ্টি থামলে আমি আপনাকে বাড়িতে দিয়ে আসবো। -কি যে বলেন,হয়তোবা মিসটেকে ফটো ডিলেট হয়ে গেছে।আর আপনি আমাকে কিসব উলটাপালটা বলে ভয় দেখাচ্ছেন। আমি সিগারেট টানতে টানতে বললাম, -আপনি কি জানেন,সায়না ১ বছর আগে মারা গিয়েছে। -কি বলেন,কালকে না আমার সাথে দেখা করে বললো, এই ফটোগুলো আমার স্বামীকে দেখিয়ে টাকা আনবা।যাতে আমরা কোথাও পালিয়ে সংসার করতে পারি। -আপনার সবকিছুই ভুল।আপনাকে মেরে ফেলার জন্যই সায়না আপনাকে আমার কাছে পাঠিয়েছে।বাঁচতে চাইলে চুপচাপ বসে থাকুন। -কি যে বলেন!আমি এসবে বিশ্বাস করিনা। এই কথা বলে হনহন করে মোজাম্মেল রুম থেকে হোটেল থেকে বের হয়ে গেল।

আমি তাকে ঠেকানোর জন্য পিছুপিছু চলে গেলাম কিন্তু তাকে আটকাতে পারলাম না। বাইক নিয়ে সে চলে গেলো।আমিও বাইক নিয়ে তার পিছন পিছন চলে গেলাম।কিন্তু দুঃখের বিষয়, সেইম জায়গায় একটা এক্সিডেন্ট ঘটে গেল।আমি বাইক থেকে নেমে গিয়ে দেখি মোজাম্মেল মৃত। বৃষ্টির শব্দের সাথে একটা আর্তনাদ আসছিলো।পিছন ফিরে দেখি সায়না,আমাকে দেখে হাসি দিয়ে বললো, -ভালো থেকো।আমি আর আসবো না। ~সমাপ্ত~ পরিশিষ্টঃ এটা একটা ভুতের গল্প।এখানে বাস্তবতা খোঁজা পাগলামী ছাড়া কিছুই না।সায়না রাগের কারণে চারজনের প্রাণ নিয়েছে।কারণ সে বিয়ের পর তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে চাচ্ছিলো না।কিন্তু তারা যেকোনো ভাবে সায়নাকে উত্যক্ত করতে থাকে।আর এই কারণেই সায়না মরার পরও তাদের উপর প্রতিশোধ নেয়।গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
©2021 All rights reserved © kalakkhor.com
Customized By BlogTheme
error: Content is protected !!

Discover more from কালাক্ষর

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading